ইসলামে আধুনিকতাবাদ

ইসলামে আধুনিকতাবাদ -১ আস সালামু আলাইকুম মূল: জামাল-আল-দীন জারাবযো আধুনিকতাবাদ কি এবং এর উৎপত্তি সমকালীন “আধুনিকতাবাদী আন্দোলন” [বা Modernist Movement’’] যে দশর্নের অনুসারী, সেই দর্শন আমাদের হিজরী ৩য় শতাব্দীর একটি গোষ্ঠীর কথা মনে করিয়ে দেয়। এই গোষ্ঠীর নাম: মু’তাযিলা। যদিও তারা কুর’আন ও সুন্নাহকে অস্বীকার করত না – কিন্তু তারা তাওইল করত – আল্লাহর রাসূল (সা.) ও তাঁর সাহাবারা যেভাবে কুর’আনরে ব্যাখ্যা দিয়েছেনে তা বাদ দিয়ে নিজের বিচার-বুদ্ধি অনুযায়ী কুরআ’নরে ব্যাখ্যা দিত (অর্থাৎ কুর’আনের মনগড়া ব্যাখ্যা দিত) । তারা না’কল (text বা রাসূল (সা.)-এঁর দিক-নির্দেশনা ) অপেক্ষা আক্বল(reason – নিজ বুদ্ধমিত্তা)-এর প্রাধান্য দিত। কালের পরিক্রমায় এই গোষ্ঠীর বিলুপ্তি ঘটেছে। (more…)

আন্তঃধর্ম সংলাপ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আস সালামু 'আলাইকুম [লেখাটি মূলত বিশ্বাসী মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য লেখা] আজকাল পৃথিবী জুড়ে একটা প্রেমময় বাণী প্রায়ই উচ্চারিত হয়ে থাকে – সেটা হচ্ছে: সকল ধর্মই মানুষকে এক অভিন্ন গন্তব্যের দিকে পরিচালিত করে অর্থাৎ – এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা যিনি – তাঁর দিকেই মানবকুলকে নিয়ে যেতে চায় সকল ধর্ম” ৷ এধরনের বক্তব্যের নিহিতার্থ হচেছ: সব ধর্মের সারকথা একই ৷ আমি যখনই কোন বিধর্মীর সাথে ধর্ম নিয়ে আলাপ করতে চেয়েছি, তখনই দেখেছি সত্যি সত্যি বিশ্বাস করেই হোক, অথবা, peaceful coexistence-এর জন্যই হোক, তারা আলোচনার পরিবেশকে হালকা করতে, সব সময় এ ধরনের একটা কথা বলতে চেয়েছে যে, আসলে সকল ধর্মের মর্মকথা একই – পার্থক্য শুধু অভিব্যক্তিতে বা বাহ্যিক প্রকাশে বা rituals-এ ৷” অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, উচ্চশিক্ষিত এক শ্রেণীর মুসলিমও, জেনে হোক বা না জেনে হোক, এ ধরনের ফাঁদে পা দিয়ে থাকেন – বিশেষত সেপ্টেম্বর ১১-র পরে, কাফির-স্বর্গ থেকে বহিষ্কৃত হবার ভয়ে, কাফিরের সামরিক শক্তির ভয়ে, হালুয়া রুটি থেকে বঞ্চিত হবার ভয়ে, অথবা ইসলামের যে ‘স্বাতন্ত্র্য’ আমাদের কাছে নিজের অস্তিত্বের চেয়েও সত্যি হবার কথা, সেটাকে “শান্তির খাতিরে” বুঝেও না বোঝার ভান করতে চেয়ে – অনেকেই এধরনের “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই” ধাঁচের মর্মবাণী আওড়েছেন ৷ অথচ মুসলিম মাত্রেরই জানার কথা যে সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই” একটা কুফরী statement । (more…)

ভালবাসায় শিরক

[হাফিজ ইবনুল কায়্যিমের (রহ.) লেখা থেকে।] বড় (প্রধান) শিরক-কে চার ভাগে ভাগ করা যায়: প্রথম প্রকার হচেছ “কামনা-প্রার্থনায় শিরক”, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নিকট প্রার্থনা করা ৷ গায়রুল্লাহকে আনুকূল্য লাভের মাধ্যম, রোগমুক্তির অবলম্বন বা দুঃসময়ে ত্রাণকর্তা রূপে গণ্য করা ৷ দ্বিতীয় প্রকার হল “নিয়তের ক্ষেত্রে শিরক”, অর্থাৎ যে কার্যাবলী আদতে দূষণীয় নয়, তথাপি বিশুদ্ধভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হওয়াতে একান্তভাবে পার্থিব স্বার্থমগ্নতায় দূষণীয় ৷ (more…)

ব্যক্তি বন্দনার সীমারেখা

ইন্নাল হামদা লিল্লাহ্! ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ্!! [লেখাটি বিশ্বাসী মুসলিম ভাইবোনদের জন্য লিখিত] অনেকেই মনে করেন, কোন প্রয়াত বা জীবিত স্কলারের বা ‘আলেমের কাজের বা লেখালেখির মাঝে ভুল ভ্রান্তি তুলে ধরা মানে “তার গীবত করা”! কিন্তু আসলেই কি তাই? না তা নয়! বরং ঐ স্কলারের লেখা থেকে মানুষ যাতে পথভ্রষ্ট না হয়, সে জন্য পাঠককে সাবধান করাটা কখনো কখনো ওয়াজিব বা ফরজের পর্যায়ে পড়তে পারে ৷ গীবতের উপর ইমাম নববীর বিখ্যাত বইতে, কোন কোন ক্ষেত্রে কারো দোষ প্রকাশ করা যেতে পারে, সে সম্বন্ধে বলতে গিয়ে ৬টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন, যার ৪ নম্বরে তিনি বলেছেন: (more…)

ফ্যশনের কথা বাদ দাও, ঢেকে চলাতেই মুক্তি

ফ্যশনের কথা বাদ দাও, ঢেকে চলাতেই মুক্তি মুসলিমদের নিকাব ফ্রান্সে একটা গরম রাজনৈতিক বিতর্কের রূপ নিয়েছে - কিন্তু স্টেলা হোয়াইট বুঝতে পারেন না এ নিয়ে এত কথা বলার কি আছে? ইংলন্ডের কেন্টে বসবাসকারী এই ক্যাথলিক ক্রিশ্চিয়ান সম্পূর্ণ ঢেকে চলার আনন্দ ব্যাখ্যা করেন: অবমুক্ত পশ্চিমাদের কাছে হিজাব অথবা নিকাব হচ্ছে নারীত্বের উপর আরোপিত এক কলঙ্ক। এটা হচ্ছে নারীসত্ত্বাকে পিষে মারার এবং দাসত্বের শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত করার একটা প্রতীক - যা কিনা নারীকে এমন এক নিষ্ক্রিয় মাংসপিন্ডে পরিণত করে, যাকে কেবল তার স্বামীর জন্য খাবার কিনতে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ইংরেজ নারীরা যখন এরকম সব-ঢেকে-চলা কোন নারীর মুখোমুখি হন, তখন তারা তার দিকে এক করুণা ও দুঃখের দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেন। তাদের জন্য নিকাব হচ্ছে এক জীবিত মরণ। ফ্রেঞ্চ কর্তৃপক্ষ, যারা স্কুলসমূহে হিজাব নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের দৃষ্টিভঙ্গীটাও হয়তো এরকমই যে: স্বল্পবয়সী কোন মেয়েকেই যেন তার তারুণ্যের মাথায় অবদমনের এই বোঝা বয়ে বেড়াতে না হয়। (more…)

আমাদের দোয়া কেন কবুল হয় না

একবার একদল লোক ইব্রাহীম বিন আধম (রহ.)-এঁর [সিরিয়ায় বসবাসকারী, কুফীয় বংশোদ্ভূত স্কলার (??-৭৭৭ খৃস্টাব্দ)] কাছে জড়ো হয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলো, "আল্লাহ্ কুরআনে বলেন: 'আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবোতাহলে কেন তিনি সাড়া দেন নি?” ইব্রাহীম(রহ.) বললেন, "হে বসরার লোকজন, তোমরা ১০টি বিষয়ে ধ্বংস হয়ে গেছো: - তোমরা আল্লাহকে স্বীকার কর, কিন্তু তাঁকে তাঁর প্রাপ্য দাও না। - তোমরা আল্লাহর কিতাব পড়, কিন্তু সেই অনুযায়ী কাজ কর না। - তোমরা দাবী কর যে, তোমরা রাসূল (সা.)-কে ভালোবাসো, কিন্তু তোমরা তাঁর সুন্নাহ্ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছো। - তোমরা দাবী কর যে, শয়তান তোমাদের শত্রু, কিন্তু তোমরা কাজেকর্মে তোমরা তার সাথে ঐক্যমত পোষণ কর। - তোমরা বল যে, তোমরা জান্নাতে যেতে চাও, কিন্তু সে জন্য কাজ কর না। - তোমরা বল যে, তোমরা জাহান্নামকে ভয় কর, কিন্তু তোমরা নিজেদের তার ভিতরেই আবদ্ধ রেখেছো। - তোমরা মৃত্যুর বাস্তবতাকে স্বীকার কর, কিন্তু তার জন্য প্রস্তুতি নাও না। - তোমরা অন্যদের দোষ-ত্রুটি নিয়ে ভাবতে ব্যস্ত থাকো, কিন্তু নিজের দোষ ত্রুটি ভুলে থাকো। - তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিয়ামত ভোগ কর, কিন্তু সেজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না। - তোমরা তোমাদের মৃতকে সমাহিত কর, কিন্তু তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর না। (more…)

দশটি সম্পদ যা আমরা অপচয় করে থাকি

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ السلام عليكم ورحمة الله و بركاته [মূল পয়েন্টগুলো হাফিজ ইবনুল কায়্যিম(রহ.)-এঁর (৬৯১-৭৫১ হিজরী) রচনা থেকে]: ১. আমাদের জ্ঞান জ্ঞান অনুযায়ী কাজ না করে এর অপচয় করা হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, আপনি জানেন যে, ধূমপান ক্ষতিকর, কিন্তু আপনি সিগারেট খেয়েই চলেছেন। এই ক্ষেত্রে, আপনি আপনার [ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কিত] জ্ঞানের অপচয় করলেন। (more…)

আপনার ধর্ম-বিশ্বাসকে শুদ্ধ করুন

আপনার ধর্ম-বিশ্বাসকে শুদ্ধ করুন-১ السلام عليكم ورحمة الله و بركاته আমরা আগেই বলেছি যে, আমরা সাধারণ মুসিলমরা প্রায় কেউই, আমাদের ধর্ম বিশ্বাসগুলো কি কি হওয়া উচিত, সেটা যখন শেখার কথা তখন [অর্থাৎ জীবনের প্রারম্ভে] methodologically শিখি না। আর তাই একটা গোটা জীবন ভুল বিশ্বাস পোষণ করেই হয়তো, আমরা কবরে চলে যাই। সম্ভাবনার দিক থেকে এই পরিণতি নিঃসন্দেহে ভয়ঙ্কর। সেজন্য আমরা আমাদের ধর্মবিশ্বাস বা ইসলামী আক্বীদাহ্ সংক্রান্ত সবচেয়ে সমাদৃত কাজগুলোর একটি, ‘আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্” থেকে বিশ্বাসগুলোকে পয়েন্ট আকারে তুলে দিতে শুরু করেছিলাম। এরই ভিতর কেউ কেউ আমাকে বলেছেন যে, ব্লগে সময় কাটাতে আসা হালকা মেজাজের ভাই-বোনদের হয়তো এসবের দিকে তাকিয়ে দেখার সময়ই হবে না । আমি, “কে জানে?” বলে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছি। এত সদস্যের মাঝে, আমার প্রচেষ্টায়, যদি একজনেরও বিশ্বাস বা আক্বীদাহ্ শুদ্ধ হয়, তবে তাও কি কম প্রাপ্তি? আর যদি কারো তাকিয়ে দেখার সময় নাও হয়, তিনিও অন্তত জানবেন যে, কখনো যদি তার “সময় হয়”, তবে তথ্যগুলো তিনি কোথায় পাবেন! আসুন তা তাহলে আমরা ‘আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্”-র ৪১ নম্বর থেকে ৫০ নম্বর পয়েন্টগুলো কি, তা একটু পড়ে দেখি: (more…)

আগন্তুক

আস সালামু আলাইকুম! নীচের লেখাটি একজন নাম না জানা বিদেশী লেখকের লেখা থেকে আপনাদের জন্য অনূদিত: —————– আমার জন্মের কয়েক মাস আগে, আমার বাবার সাথে একজন আগন্তুকের দেখা হয়েছিল, যে আমাদের ছোট্ট শহরে তখন নতুন এসেছিল। শুরু থেকেই আমাদের বাবা, ঐ মুখর আগন্তুকের প্রতি অত্যন্ত আকৃষ্ট বোধ করেন এবং শীঘ্রই তাকে আমাদের সাথে এসে বসবাস করতে আমন্ত্রণ জানান। তার চেহারা, বাইরে থেকে দেখতে খুব আকর্ষণীয় মনে না হলেও, সবাই তাকে খুব তাড়াতাড়িই আপন করে নিল এবং কয়েক মাস পর পৃথিবীতে যখন আমার আগমন ঘটলো, তখন আর সবার সাথে সেও আমাকে স্বাগত জানালো। আমি যখন বড় হচ্ছিলাম, তখন, কখনো বাড়ীতে এই আগন্তুকের অবস্থান নিয়ে মনে কোন প্রশ্ন জাগেনি। আমার কচি মনে পরিবারের সকল সদস্যের জন্য একেকটা আসন ছিল। আমার ৫ বছরের বড় ভাই ইউসুফ ছিল আমার জন্য অনুসরণীয় উদাহরণ। আমার ছোট বোন সাদিয়া, আমার খেলার সাথী ছিল – সে আমাকে বড় ভাই হবার যোগ্যতা দান করে এবং মানুষকে ”ক্ষ্যাপানোর” বিদ্যা অর্জনে সহায়তা করে। আমার বাবা-মা ছিলেন সম্পূরক ও পরিপূরক শিক্ষক – মা আমাকে আল্লাহকে ভালোবাসতে শেখান, আর বাবা শেখান কি করে আল্লাহর আনুগত্য করতে হয়। কিন্তু ঐ আগন্তুক আমাদের গল্প শোনাতো। (more…)

শিয়া-doctrine-এর ফাঁদে পা দেবার আগে নিজের দ্বীনকে জানুন

শিয়া-doctrine-এর ফাঁদে পা দেবার আগে নিজের দ্বীনকে জানুন – ১ ভূমিকা: এই লেখাটি প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু somewhereinblog-এর “ইসলাম” গ্রুপের জন্য লেখা। তারপর ঐ সাইটের আরো ২/১টা গ্রুপে অবগতির জন্য দেয়া হয়েছিল। এই লেখার ভূমিকাস্বরূপ বা পূর্বকথা হিসেবে যে লেখাটা লিখেছিলাম: ঘোলা পানিতে মাছ শিকার – তা ইতোমধ্যেই Peace in Islam-এ “পোস্ট” হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম এখানে আর শিয়া-doctrine নিয়ে কিছু লেখার প্রয়োজন নেই, কারণ এখানকার প্রায় সবাই practicing Muslim বলেই মনে হয়। কিন্তু গতকাল জুমু’আর খুতবায়, আমি যে মসজিদে জুমু’আর সালাত আদায় করলাম তার খতিব, বাংলাদেশে শিয়াদের অতি সাম্প্রতিক insidious অগ্রযাত্রা সম্বন্ধে আলোচনা করলেন – যা শুনে চিত্রটা, ধারণার চেয়ে অনেক ভয়াবহ বলে মনে হলো। রংপুর/সৈয়দপুর অঞ্চলে বহু বাংলাদেশী ও বাংলাভাষী মানুষ নাকি “শিয়া” হয়ে যাচ্ছেন সন্তর্পনে। (more…)

আক্বীদার আরো কিছু পয়েন্ট

السلام عليكم ورحمة الله و بركاته আমরা সবাই, পৃথিবীর এই সীমিত জীবনে, সব সময়ই কাউকে না কাউকে ভালোবাসি। সময়ের যে কোন একটা cross section-এ এমন কেউ থাকে, যাকে আমরা মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি – তা বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে এমনকি কোন বন্ধুও হতে পারে। এই ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে নানাভাবে। আমরা ছেলেবেলায় দেখেছি, মা ঘরের কাজের বুয়াকে খুব স্পেশাল মজাদার কোন খাবার দিলে, সে তা না খেয়ে তুলে রেখে দিচ্ছে তার ছোট্ট বাচ্চাটার জন্য – কি selfless স্নেহ তাই না। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় ঐ মা (গল্পের বুয়া) তার বাচ্চার জন্য স…ব করতে পারে। ধরুন ঐ মা যদি জানে যে, কোন কারণবশত তার ঐ সন্তানের দেহ আগুনে পোড়ানো হবে এবং তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুড়ে ছাই হবে, তাহলে কি সে বসে থাকবে? নিশ্চয়ই না! সন্তানকে আগুন থেকে বাঁচাতে সে সর্বস্ব নিয়োগ করবে। (more…)

ইসলাম নিয়ে কথা বলা কি “ক্যাচাল”!

আস সালামু আলাইকুম! [ঘটনাটা "সামু"-র - কিন্তু আপনাদের সাথে শেয়ার করা প্রয়োজন মনে করছি!] বেশ ক’বছর আগে, একসময় আমাকে পেশাগত প্রশিক্ষণের জন্য নারায়গঞ্জে যেতে হতো। নারায়গঞ্জে আমি যে জায়গাটায় তখন যেতাম, তার পথে একটা পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। ঐ পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটা নিম গাছ ছিল – কখনো ভালো করে খেয়ালই করি নি ওটা কি গাছ। একদিন সকালে ঐ পথে যেতে যেতে দেখলাম, নিম গাছটির চারিদিকে বেশ কিছু মানুষের ভীড় আর অনেক কয়টা মোমবাতি জ্বলছে। জিজ্ঞেস করে জানলাম ঐ গাছটা থেকে নাকি সাদা রঙের এক ধরনের ব্যতিক্রমী রস বের হচ্ছে – আর গাছের ঐ কেরামতের জন্য গাছের পাদদেশে ভক্তকুলের ঐ অর্ঘ্য! আমাদের দেশের মুসলিমরা কিসের না পূজা করে বা আরাধনা করে? গাছ, সাপ, কবর, মাজার, তান্ত্রিক মা, ন্যাংটা বাবা, পাগলা বাবা … (more…)

ইসলাম নিয়ে কথা বলা

السلام عليكم ورحمة الله و بركاته আমার আগের পোস্টগুলো অনেকের কাছে একটু ভারী মনে হতে পারে – কারণ ওগুলো ছিল ইসলামের একেবারে মৌলিক বিশ্বাস বিষয়ক আলোচনা – মনে হতে পারে অনেক তত্ত্ব কথা দিয়ে ভরা, গজ গজ খস খস করা সব শুকনো বিষয়। এমনটা কারো মনে হয়ে থাকলেও আমি আসলে কাউকে দোষ দিই না। কারণ আমরা প্রায় কেউই “দ্বীন” শিখি না। বাংলাদেশর মুসলিমদের কত % ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, সেই পরিসংখ্যান আমার জানা নেই। তবে ৫% হলেও সেটা খুব খুশির খবর। কেন নামাজ পড়বো, তা না জেনেই আমরা নামাজ পড়তে শিখি এবং পড়ি – নামাজে কি পড়ছি তা না জেনেই বা না বুঝেই, নামাজ পড়া এই ক্ষুদ্র অংশ নামাজ পড়তে পড়তে কবরে চলে যাই। ফলে আমার নামাজের আমার উপরই কোন প্রভাব থাকে না – পরিবেশ প্রতিবেশ ইত্যাদির উপর আর কি থাকবে? (more…)

মুসলিম Set of Beliefs এর বাকী কিছু পয়েন্ট

السلام عليكم ورحمة الله و بركاته আমরা আবার মুসলিম ধর্মবিশ্বাসের [বা আক্বীদার] পয়েন্টগুলোতে ফিরে যাবো ইনশা’আল্লাহ্! আমরা প্রথম ৩২টি পয়েন্ট তুলে দিয়েছিলাম। আজ ইনশা’আল্লাহ্ পরের কয়েকটি তুলে দেবো: ৩৩)কুর’আন আল্লাহর বাণী। এটা তাঁর কথা(speech) – যা কিভাবে সম্ভব হয়েছে তা জানা নেই। তিনি রাসূলের কাছে অহী হিসেবে এটা পাঠিয়েছেন। মু’মিনরা পরম সত্য হিসেবে এটাকে গ্রহণ করে। তারা নিশ্চিত যে সত্যিই এটা আল্লাহর কথা। এটা সৃষ্ট নয় – যেমন মানুষের কথা হয়ে থাকে, এবং যে এটা (অর্থাৎ কুর’আন) শোনে এবং দাবী করে যে, এটা মানবীয় ভাষণ, সে অবিশ্বাসীতে পরিণত হয়। আল্লাহ্ তাকে সতর্ক করেন, বিধিনিষেধ আরোপ করেন এবং আগুনের ভয় দেখান যখন তিনি বলেন, ‘আমি তাকে আগুনে পোড়াবো’ (আল মুদ্দাস্সির, ৭৪:২৬) যখন আল্লাহ্ তাদের আগুনের ভয় দেখান যারা বলে, ‘এটা শুধুমাত্র মানুষের বাণী’ (আল মুদ্দাস্সির, ৭৪:২৫)। আমরা নিশ্চিতভাবে জানতে পারি যে, এটা মানবজাতির প্রতি সৃষ্টিকর্তার বাণী এবং এটা সম্পূর্ণই মানবজাতির ভাষণের বিপরীত। (more…)

যুক্তি-তর্কে Reference Frame

বিতর্কে তো বটেই, যে কোন অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত মানুষের সাথে ভাবের আদান প্রদানের আগেও, উভয়ের আলোচনার “রেফারেন্স ফ্রেম” বা মাপকাঠি তথা পটভূমিটা একই কিনা তা নিশ্চিত করাটা খুবই জরুরী। তা না হলে ব্যাপারটা ”দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা” বা ”দোঁহার ভাষা দুই মত” হয়ে যেতে পারে। আমি একটা ইংরেজি শব্দ বেছে নিচ্ছি সাধারণ উদাহরণ হিসেবে। আমরা যখন port শব্দটি বলি, তখন সাধারণভাবে যে কেউ বুঝবেন যে, এই শব্দ দিয়ে “বন্দর” বুঝানো হচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তিভেদে এই শব্দটির মানে “বাম দিক” বা “বাম পার্শ্ব” হতে পারে আবার “ছিদ্রপথ” বা “নির্গমন পথ”ও হতে পারে। (more…)

আল্লাহ্ সংক্রান্ত সঠিক বিশ্বাস (বা আক্বীদাহ্)

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ السلام عليكم ورحمة الله و بركاته আগেই যেমন বলেছি যে, এখন থেকে প্রায় ১২০০ বছর আগে রচিত “আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্” ছিল আক্বীদাহর উপর এক যুগান্তকারী কাজ যা নিয়ে, যার ব্যাখ্যা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে পরবর্তী সময়ের বহু আলেমের জীবন কেটে গেছে। “আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্”-য় লিপিবদ্ধ ইসলামী বা মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ১০৫ টি পয়েন্টের প্রথম ২৮টি হচ্ছে আল্লাহ্ সংক্রান্ত বিশ্বাস। আমরা ইনশাল্লাহ্ একে একে সেগুলো উল্লেখ করবো: (more…)

আক্বীদা সম্বন্ধে জানার উপায়

السلام عليكم ورحمة الله و بركاته রাসূল(সা.) বেঁচে থাকতে কাউকে ভাবতে হয়নি “কি বিশ্বাস করতে হবে” আর “কি বিশ্বাস করা যাবে না”। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর পর, বিশেষত উমর (রা.)-এঁর সময়, ইসলামের এত দ্রুত প্রসার ঘটে যে, ধর্মান্তরিত মুসিলমদের নতুন জনসংখ্যাকে সামাল দেয়া বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। মুসলিমদের quantity বাড়লেও quality বা গুণগত মান হ্রাস পায় – নতুন মুসলিমদের অনেকেই তাদের আগের ধর্মের, তথা, জাতীয়তার সংস্কার ও কু-সংস্ককারের “লট-বহর” সঙ্গে নিয়ে ইসলামে প্রবেশ করেন। এতে আক্বীদাতে বা বিশ্বাসে ভুল-ত্রুটি মিশ্রিত হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমররে(রা.) জীবদ্দশায়ই, বসরায় একদল লোক ঈমানের ৬ টি স্তম্ভের একটিকে – অর্থাৎ ক্বদরকে – অস্বীকার করতে শুরু করে এবং সেখান থেকে দু’জন এসম্বন্ধে জানতে আসলে, তিনি তাঁর বাবা উমর (রা.) সূত্রে “হাদীস জিবরীল” নামক বিখ্যাত হাদীসখানি বর্ণনা করেন, যাতে সুনির্দিষ্টভাবে ইসলাম ও ঈমানের স্তম্ভগুলি এবং ইহসান সম্বন্ধে বলা হয়েছে। (more…)

শুদ্ধ আক্বীদাহ বা বিশ্বাসের গুরুত্ব

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ السلام عليكم ورحمة الله و بركاته আমরা সবাই স্বপ্ন দেখে থাকি – না, আভিধানিক অর্থে যে স্বপ্ন, আমরা তার কথা বলছি না, বরং, আমাদের ভালোলাগা বিষয়াদি বাস্তবায়নের স্বপ্নের কথা বলছি আমরা এখানে। আমরা যারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, ইসলাম আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এবং ইসলাম আমাদের জন্য আল্লাহ্-নির্ধারিত এক জীবনব্যবস্থা, যেমনটা তিনি কুর’আনের ৫:৩ আয়াতে বলেছেন, তারা নিশ্চয়ই মনের গোপন কোণে এমন স্বপ্ন লালন করে থাকি যে, আমরা একদিন হয়তো আবারো মদীনার স্বর্ণ-যুগের মত একটা সময়ে ফিরে যাবো – যখন হযরত উমর(রা.) বা উমর বিন আব্দুল আজিজের মত কেউ পৃথিবী শাসন করবেন – পৃথিবীতে কোন অবিচার থাকবে না, অনাহার থাকবে না, থাকবে না মানুষের উপর মানুষের শাসন বা শোষণ…। কিন্তু আপনি কি ভেবে দেখেছেন যে, আপনার এমন স্বপ্ন যদি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, (more…)

সঠিক পথ কি একটা না অনেকগুলো?

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ السلام عليكم ورحمة الله و بركاته অনেকেই বলে থাকেন যে, যে কোন গন্তব্যে পৌঁছানোর যেমন নানা পথ থাকতে পারে তেমনি, আল্লাহর সন্তুষ্টি বা জান্নাত লাভের জন্য না না পথ, মত এবং পন্থা থাকতে পারে! কিন্তু কথাটা কি ঠিক? প্রত্যেক মুসলিমের উচিত ব্যাপরটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা। কুর’আনের বহু আয়াতে আল্লাহ্ সিরাতুল মুস্তাকিম বা সরল [তথা সঠিক] পথের কথা বলেছেন এবং বর্ণনা করতে গিয়ে সব সময় এক বচন ব্যবহার করেছেন। যেমন ধরুন সূরা ইউসুফের ১০৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ বলছেন: (more…)

ঐক্য অথবা বিলুপ্তি

[একজন বিদেশী আলেমের লেখা থেকে অনুদিত] একটা বিখ্যাত গল্প আছে, কেউ কেউ হয়ত শুনে থাকবেন ৷ গল্পটা চারটি গরুকে নিয়ে ৷ তিনটি কালো, একটি সাদা ৷ তারা একটা শ্বাপদসংকুল এলাকায় বাস করতো ৷ এজন্য নিরাপত্তার খাতিরে তারা একসাথে থাকত এবং একে অপরের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতো ৷ যার ফলে তারা টিকে ছিল ৷ একদিন কালো তিনজন একত্র হল এবং বলল ‘এই সাদা গরুটার জন্য আমরা ধরা পড়ে যাব ৷ আমরা কালো বলে রাতের বেলা শত্রু আমাদের দেখতে পায়না, কিন্তু তাকে দেখতে পায় ৷ চল ঐ গরুটাকে আমরা পরিত্যাগ করি ৷ (more…)