এখনো তবুও তো বেঁচে আছি

বহুদিন মানুষের চোখ দিয়ে জগৎ-সংসার দেখা হয় না! ইট, বালু, কাঠ, পাথর বা আরো যত জড় বস্তু - সেসবের চোখ দিয়েই, অনিমেষে চেয়ে দেখি ঘটমান বর্তমানকে। পেঁয়াজের খোসার মত পরতের পর পরত, একে একে ঝরে পড়ে মূল্যবোধগুলো - কারা যেন তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে তুলে নেয় লজ্জা-শরমের আবরণগুলো - আমরা ভাবি: হোক না, দেহে প্রাণ নিয়ে তবু তো এখনো বেঁচে আছি - আবরণগুলো গেলেও, ভেতরের শাঁসটুকু তো বেঁচে আছে! (more…)

রাসূলের (সা.) ভূমিকাসমূহ – ২

[এই পোস্টটা, যারা seriously ইসলাম সম্বন্ধে জানতে চান, তাদের জন্য। আমরা যখন প্রায় "নাস্তিক" একটা মস্তিষ্ক নিয়ে বড় হচ্ছিলাম, তখন চাইলেও ইসলাম সম্বন্ধে জানার তেমন সুযোগ ছিল না - বলা যায়: আজকের মত সহজলভ্য source বা resource কোনটাই তখন ছিল না। আজ তাই যারা "searching souls" - তাদের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দিতে বড় ইচ্ছা করে।] এই সিরিজের আগের লেখাটা রয়েছে এখানে: www.somewhereinblog.net/blog/mariner77/29183267 আমরা ইনশাল্লাহ্ রাসূল (সা.)-এঁর ৪টি প্রধান ভূমিকা সামনে রেখে আলোচনা করবো : (more…)

সমুদ্র বিষয়ক অনুভূতি

"সামু"-তে সমুদ্র নিয়ে অনেক ধরনের romanticism ও obsession রয়েছে অনেকের। সমুদ্র নিয়ে চিন্তা ভাবনাগুলোর অনেকটুকুই কেবলই স্বপ্ন, কল্পনা - আর তাই মিথ্যাও বটে। অনেকেই হয়তো বলবেন যে, "না হয় আমরা সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত কল্পনার রাজ্যেই আপন মনে একটু 'ভালো' থাকলাম - কি দরকার 'স্বপ্নভঙ্গের'?" আবার কেউ হয়তো বলবেন, "সুন্দরকে সত্য হতে হবে, অসত্য কি সুন্দর হতে পারে??" যাহোক, সমুদ্র নিয়ে এখানে [বা অন্য ব্লগেও] যে লেখালেখিগুলো হয়, সেগুলো পড়ে মনে হয়েছে যে, জীবনের অনেকটুকু সময় যে সমুদ্রে কেটে গেলো - তার অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা অন্যের সাথে শেয়ার করা উচিত। সেই মন নিয়ে নীচের পোস্টটা দেয়া হয়েছিল, পড়ে দেখুন: (more…)

রাসূলের (সা.) ভূমিকাসমূহ – ১

[এই পোস্টটা, যারা seriously ইসলাম সম্বন্ধে জানতে চান, তাদের জন্য। আমরা যখন প্রায় "নাস্তিক" একটা মস্তিষ্ক নিয়ে বড় হচ্ছিলাম, তখন চাইলেও ইসলাম সম্বন্ধে জানার তেমন সুযোগ ছিল না - বলা যায়: আজকের মত সহজলভ্য source বা resource কোনটাই তখন ছিল না। আজ তাই যারা "searching souls" - তাদের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দিতে বড় ইচ্ছা করে।] রাসূলের (সা.) ভূমিকাসমূহ ……একটু গবেষণা করলে দেখা যবে যে, রাসূল (সা.)-এঁর গুরুত্ব, তিনি মুসলিম জাতির জন্য যে সমস্ত ভূমিকা পালন করেন, সে সবের মাঝে নিহিত। এই ভূমিকাগুলো সুন্নাহ ও হাদিসকে অনুসরণ করার অপরিহার্যতাকে আরো বেশী করে প্রতিষ্ঠিত করে। বহু স্কলার এইসব ভূমিকাকে লিপিবদ্ধ করে গেছেন। নবী (সা.)-এঁর বহুবিধ ভূমিকা সম্বন্ধে যদিও আলোচনা করা যেত, তবুও আমরা এখানে কেবল তাঁর চারটি প্রধান ভূমিকা সম্বন্ধে আলোচনা করব : (more…)

আমাদের ব্যক্তি-পূজা

আমরা, এদেশের ব্যক্তি-পূজারী আম জনতা কেবলই ব্যক্তিরূপ মূর্তি খুঁজে বেড়াই - বন্দনার জন্য, পূজার জন্য, ধ্যানের জন্য - মালা পরাবার জন্য, হাততালি দেবার জন্য - পল্টন ময়দানের বেদীতে উপস্থাপনের জন্য। কি বিচিত্র আমাদের গতি, প্রকৃতি - পৌত্তলকিতার ঐতিহ্য প্রবাহমান ধমনীতে। তাই বুঝি “মূরত” ও “সূরত” ছাড়া মন বসে না, মন মানে না! কখনো ব্যক্তিরূপ মূর্তি- আবার কখনো মূর্তিরূপ ঈশ্বর। নিজেরা মূর্তি গড়ি - অতঃপর তার কাছে নিজেকে সমর্পণ করি। মোহভঙ্গ হলে পরে পুরাতন মূর্তি ভেঙ্গে ফেলি- আবার তার জায়গায় নতুন মূর্তি গড়ার আয়োজন করি। (more…)

আমি সমুদ্রের রূপ দেখেছি

আমি সমুদ্র দেখেছি, একবার নয়, বার বার - বহুবার। বন্দর থেকে বন্দরে, সাগর মহাসাগর পেরিয়ে ছুটে গেছি বার বার! কৌতূহলী তারাদের সাথী করে - সমুদ্রে, মহাসমুদ্র্রে কেটেছে জীবনের অগণিত নিঃসঙ্গ রাত - প্রায় একটা গোটাজীবন! একে একে সবই দেখেছি - সাগর, উপ-সাগর, মহাসাগর। বহু সূর্যোদয়, বহু সূর্যাস্ত দেখেছি- একবার নয়, বার বার - বহুবার। (more…)

প্রতিষ্ঠিত ইবাদতের শর্তের বিপক্ষে “কুর’আন অনলিদের” অবস্থান

১৪০০ বছরের সকল মূলধারা স্কলাররা একমত যে, ঈমান আনার পর ইবাদত কবুলের ২ টি প্রধান শর্ত হচ্ছে: ১) ইবাদত কেবল আল্লাহর জন্য নিবেদিত হতে হবে। ২) ইবাদত রাসূল(সা.)-এঁর দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতিতে করতে হবে। কিন্তু “কুর’আন অনলি”-রা বলে যে, দ্বিতীয়টি নাকি ভিত্তিহীন। নীচে দেয়া আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, দ্বীনের সকল ব্যাপারে রাসূল (সা.)-এঁর আদেশ/নিষেধ আমাদের জন্য শিরোধার্য – তাঁর অনুসরণ ও আনুগত্য করা আমাদের জন্য ফরজ এবং আমাদের ঈমানের শর্ত। 1. Say: “If ye do love Allah, follow me: Allah will love you and forgive you your sins; for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.” Say: “Obey Allah and His Messenger”: but if they turn back, Allah loveth not those who reject Faith. [3:31-32] উপরের আয়াতে, যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের (সা.) দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে – তাকে আল্লাহ্ অবিশ্বাসী বলেছেন। (more…)

হাদীস শব্দটির অর্থ, হাদীসের গঠন ও প্রকারভেদ

হাদীস শব্দটির অর্থ আভিধানিক ভাবে ‘হাদীস ’শব্দটির অর্থ হচেছ : নতুন, সাম্প্রতিক, নতুন ভাবে অস্তিত্বলাভকারী, প্রথম বারের মত, আগে যা ছিল না …. তথ্য, একটা তথ্য বিশেষ, মেধা, ঘোষণা …একটা জিনিস বা ব্যাপার , যা নিয়ে কথা বলা হয় , যা বলা হয় ,অথবা বর্ণনা করা হয় …। কুর’আন এবং হাদীস দুটোতেই, শব্দটি একটি ধর্মীয় যোগাযোগ, একটা সাধারণ কাহিনী, একটা ঐতিহাসিক কাহিনী, এবং একটা ঘটমান কাহিনী বা কথোপকথন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে ৷ পারিভাষিকভাবে একটা হাদীস হচ্ছে মূলত রাসূল (সা.)-এঁর যে কোন বর্ণনা – তার কথা কাজ এবং নীরব সম্মতি, আচরণ, শারীরিক বৈশিষ্ট অথবা জীবন বৃত্তান্ত সংক্রান্ত যে কোন বর্ণনা ৷ অন্য কথায়, হাদীসের স্কলাররা যেভাবে সুন্নাহর সংজ্ঞা দিয়ে থাকেন, সেই অনুযায়ী সুন্নাহ সংক্রান্ত যে কোন বর্ণনাই হচ্ছে হাদীস ৷ (more…)

আল্লাহ্ তা’আলা সম্পর্কে অজ্ঞতাবশত কথা বলা

মূল: জামাল আল দীন জারাবোজো [এই লেখাটি কেবলমাত্র বিশ্বাসী মুসলিমদের জন্য] মুসলিম স্পেনের বিখ্যাত স্কলার ও তফসীরকার আল কুরতুবী, তাঁর তাফসীরে, যেসব লোক কুরআন পড়তে গিয়ে বলে ‘আমার মনে হয়’, ‘আমার মন বলে’ অথবা ‘আমার মতে’ সে সব লোক সম্পর্কে বলেন যে, তারা আসলে আল্লাহ সম্পর্কে না জেনে কথা বলে এবং এটা একটা অন্যতম বড় অপরাধ। এবং এরা প্রকৃতপক্ষে যিনদিক এবং [তাদের অপরাধের গুরুত্ব বোঝাতে] তিনি বলেন যে, এদের মুরতাদ হিসেবে হত্যা করা উচিত। যখন কেউ কুরআনের আয়াত আবৃত্তি করে এবং যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ না করে এবং যথাযথ জ্ঞান ব্যতীত ঐ আয়াতের ব্যাখ্যা করে, সে হয়তো তার নিজের ‘হাওয়া’র অনুসরণ করে (হঠাৎ একটা কিছু মনে হল, ভাল মন্দ বিচার না করেই সেটার অনুসরণ করা), অথবা নিজের বাসনার বশবর্তী হয়, অথবা সে হয়তো শয়তানের দ্বারা পরিচালিত হয়, নয়তো সে নিজের অনুমানের উপর নির্ভর করে; যেটার (অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলা) সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা কুরআনে বহুবার উল্লেখ করেছেন, অথবা তার মনে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার পক্ষ থেকে ইলহাম হতে পারে, কিন্তু এই শেষোক্ত সম্ভাবনাটি অত্যন্ত ক্ষীণ। কেন? কেননা এক্ষেত্রে কুরআনের ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতির অনুসরণ করা হয়নি, এবং যেহেতু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি তাফসীরের যথার্থ পদ্ধতি অবলম্বন না করেই তাফসীর করেছে, অতএব সে ইতিমধ্যেই একটি অপরাধ করে ফেলেছে। যথার্থ জ্ঞান ব্যতীত কুরআন সম্পর্কে কথা বলে এবং সঠিক জ্ঞান, প্রশিক্ষণ এবং যোগ্যতা ছাড়াই এর ব্যাখ্যা দান করে, সে ইতিমধ্যেই একটি বড় অপরাধ করেছে, তাই এর সম্ভাবনা খুবই কম যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা একটা ‘অপরাধের’ মধ্য দিয়ে তাকে অনুগ্রহ করবেন ও কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা তাকে শিক্ষাদান করবেন। যখন কেউ বলে যে, অমুক আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এটা বোঝাতে চেয়েছেন কিংবা ওটা বলতে চেয়েছেন, তখন সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার পক্ষে কথা বলছে এবং সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সম্পর্কে বলছে, আর তাই সেটা যদি সে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ব্যতীত করে, তাহলে সে অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ করছে। (more…)

“সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” – এই প্রশ্নের সরল উত্তর

“মুক্তমনা” নাস্তিকরা, “ডি-জুস”-কালচারে-বড়-হওয়া নিজের দ্বীন-সম্বন্ধে-একেবারে-অজ্ঞ কোন কিশোর বা তরুণকে যে ক’টি প্রশ্ন করে ভড়কে দেয়, তার একটি হচ্ছে: “সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” অথচ, একটু চিন্তা করলেই দেখা যাবে যে, এই প্রশ্নটা সেই গ্রাম্য “শঠ-পন্ডিতের” সাথে “সত্যিকার পন্ডিতের” বিতর্কের প্রসিদ্ধ গল্পের মত – যেখানে “শঠ-পন্ডিত” তার প্রতিদ্বন্দিকে জিজ্ঞেস করেছিল: I don’t know – মানে কি? চলুন দেখি “সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” এই প্রশ্নের একটা সরল উত্তর ভেবে দেখা যাক: স্রষ্টা এমন সত্তা যিনি সৃষ্ট নন, তিনি অস্তিত্বে আসনে নি বরং সর্বদা অস্তত্বিশীল এবং তিনি সৃষ্টিজগতের স্থান-কাল কাঠামোর অংশ নন ৷ আর এজন্যই তিনি অসৃষ্ট বা অবস্তু, ফলে তাঁর সৃষ্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই ৷ এজন্য স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছেন, এই প্রশ্নটিই অবান্তর ৷ যেমন একটি ছবি কে এঁকেছে, এর উত্তরে একজন চিত্রশিল্পীর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক, কিন্তু “চিত্রশিল্পীকে কে এঁকেছে?” এই প্রশ্নটি অবান্তর কেননা চিত্রশিল্পীর ক্ষেত্রে “আঁকা” নামক ক্রিয়াটি প্রযোজ্য নয় ৷ তাই চিত্রশিল্পীর অংকিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, অন্য কথায় “অংকিত নয়” এমন একজন অংকনকারী থাকা সম্ভব ৷ একইভাবে “সৃষ্ট নন”, এমন একজন স্রষ্টা থাকা সম্ভব, তাই বার্ট্রান্ড রাসেলের “হু ক্রিয়েটেড গড মাম?” (more…)

যে কোন মুরুব্বী বা বুজূর্গের আনুগত্য “শর্ত সাপেক্ষ” বা conditional

বেশ আগে হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত একজন ইহুদী সাংবাদিকের লেখা একটা বই পড়েছিলাম। বইটির নাম: A heart turned East । ঐ সাংবাদিক, Adam Lebor যখন যুদ্ধরত বসনিয়ায় কর্মরত ছিলেন, সেই অবস্থায় মুসলিমদের সম্বন্ধে তার মনে খুব আগ্রহ জন্মে। তারই সূত্র ধরে মুসলিমদের সাধুবাদ জানিয়ে তার ঐ বই লেখা। তিনি মুসলিমদের যে সমস্ত ব্যাপারে খুব impressed হয়েছিলেন তার একটি ছিল – তারা যে ভাবে জামাতবদ্ধভাবে একত্রে আল্লাহর সামনে হাটু গেড়ে বসে ও সিজদায় যায় (অর্থাৎ আমাদের সালাত, তাকে খুব অবাক ও impressed করেছিল) ! এর বহুদিন পরে আমি চিন্তা করেছিলাম যে, আল্লাহর আদেশে মুসলিমরা তাদের ইমামের কি সাংঘাতিক রকমের আনুগত্য করে!! বাইরে থেকে যদি, মুসলিম নয় এমন একজন লোক ১০, ১৫ বা ২০ লক্ষ লোকের একটা জামাত দেখে – যেমনটা মক্কার মসজিদুল হারামে হজ্জ বা তারাবীর সময় দেখা যায় – তবে তার অবাক হবারই কথা। একজন মানুষের command-এ কিভাবে এতগুলো লোক রুকুতে বা সিজদায় যাচ্ছে – বুঝিবা তাদের নিজস্ব কোন সত্ত্বাই নেই! কিন্তু এই আনুগত্য কি unconditional বা নিঃশর্ত ? মোটেই নয়! ধরুন কোন ইমাম যদি ক্বিরাত পড়তে গিয়ে সূরা ফাতিহার (more…)

তোমরা যা বলো, তাই বলো

আর কেউ না হোক, তুমি তো আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ দেখতে পাও। এ হৃদয়ের অলিন্দ নিলয় থেকে যখন টপ টপ করে শেষ-প্রায় রক্তের ক্লান্ত ফোটা ঝরে- তুমি তা দেখ তো? তোমায় বোঝাতে পেরেছি তো যে, তোমারই জন্য আমার চুপ থাকা, সকল লাঞ্ছনা-গঞ্জনা মুখ বুজে সওয়া, নিজের লজ্জা অভিমান সব ভুলে যাওয়া। অবুঝ এই তারুণ্যকে কে বোঝাবে: আনন্দ আনন্দ বলে চেঁচালেই প্রশান্তি আসে না - বরং অন্তঃসারশূন্য হৃদয় আরো একধাপ শূন্য হয়, নিঃস্ব হয়, আনন্দের স্থপতিদের কারসাজিতে; কেউ হয়তো সর্বস্ব হারায় বিবস্ত্র সেই বাঁধনের মত। (more…)

কি আমার ঐতিহ্য?

এই তো, আর মাত্র দু’দিন বাকী, বৈশাখী “মিলন-মেলায়” ম’ ম’ করবে ঢাকা শহর। আমার আজন্মের ভালোলাগা ভালোবাসা শহর!! এ শহরে আমার পিতার কেটেছিল অর্ধ শতাব্দী - আমার কেটে যাচ্ছে গোটা একটা জীবন। আমার পিতা আমাকে অনেক কিছুই বলে গেছেন - শিখিয়ে গেছেন: ”সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি..।” আরো কত কি! কই বলেন নি তো - বৈশাখ বিনে আমার ম্লেচ্ছ জীবন বৃথা!! অথবা মুখে-বুকে-পিঠে উল্কি না আঁকলে আমার বৌ-ঝিয়ের বাঙালী পরিচয় নিয়েই টানাটানি! বরং শুনেছি সময়টা সর্বহারা কৃষক-শ্রমিকের করুণ দুঃসময় - “ধানাই-পানাই” আর বরদাস্ত করে না রক্ত-চোষা মহাজন। চড়াও হয় ঋণগ্রস্ত মানুষের উপর; নোবেল প্রাইজ চায় না তারা- এসব মহাজনেরা কেবলই সুদে-আসলে তাদের পাওনা চায় । (more…)

বিনোদন মানুষকে কি ভুলিয়ে রাখে?

বিনোদন মানুষের জীবনের অমূল্য সময় চুরি করে নিয়ে যায় মানুষের অজান্তেই। মানুষ যেন স্বেচ্ছায় নিজেকে ক্ষয় করার বা নিঃশেষ করার ব্রত নিয়ে বিনোদনের জালে ধরা দেয়। আসুন আমরা ভেবে দেখি বিনোদন আমাদের কি কি ভুলিয়ে রাখে: ১। মানুষের ক্ষুদ্রতা ও অসহায়ত্ব: বিনোদনের মাধ্যমে মানুষকে তার ক্ষুদ্রতা ও অসহায়ত্ব ভুলিয়ে রাখা হয়। বিনোদনে ডুবে থাকলে মানুষ নিজেকে নিয়ে এবং মহাবিশ্বের সাথে নিজের সম্বন্ধ ও সমন্বয় নিয়ে ভাববার মত কোন অবসর পায় না (মাননীয় পাঠক! আপনি যদি ঢাকা শহরের বাসিন্দা হয়ে থাকেন, তাহলে একবার ভেবে দেখুন তো শেষ কবে আপনি রাতের তারাভরা আকাশের দিকে ২ মিনিট চেয়েছিলেন? আরেকটু মনে করে দেখতে চেষ্টা করুন - খুব সম্ভবত রাতের তারাভরা আকাশের দৃশ্যটা আপনি শেষ টেলিভিশনের পর্দায় ’মিথ্যা মিথ্যা’ দেখেছিলেন, কোন সিনেমার দৃশ্য হিসেবে!)। বরং সে জল্পনা-কল্পনার এক বায়বীয় ও তাত্ত্বিক জগতে বসবাস করে - বাকচাতুর্যের এক ছায়াময় জগতে তার আধিপত্যবলে সে নানা রকম তত্ত্ব উদ্ভাবন করতে শুরু করে। আজকালকার সাইন্স ফিকশনের যুগে তো কল্পকাহিনী, কল্পনা আর বাস্তবতা সব মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। (more…)

আমরা কেন আমরা

আমরা কেন আমরা - পুরুষ এবং নারী - জানতে সবাই এই বইটি পড়ে দেখতে পারেন: Brainsex – Anne Moir & David Jessel দু'জন বৃটিশ বিজ্ঞানীর লেখা এই বইটার নাম Brainsex হলেও, এটা sex নিয়ে লেখা কোন বই নয় বরং gender politics নিয়ে লেখা বই। ব্যক্তিগতভাবে, আমার কাছে পুরুষ ও নারীর এই পার্থক্য ও বৈশিষ্ট্যের স্বাতন্ত্র্যটুকু না থাকলে, পৃথিবীর এই জীবন অর্থহীন ও বিবর্ণ মনে হতো! যারা বিবাহিত, তারা একটু ভেবে দেখুন তো, ভোরে ঘুম ভেঙ্গে বিছানায় আপনি যদি দেখেন যে, অপর যে ব্যক্তিটি আপনার বিছানা শেয়ার করছে, সে অবিকল/বিলকুল আপনার মতই দেখতে - আপনার কেমন লাগতো?! কি ভয়ঙ্কর বিভীষিকাময় একটা দুঃস্বপ্ন তাই না?? (more…)

“জেনেরিক” ইসলাম

তোমাকে কতবার বলেছি, আমায় অন্ধ করে দিও না- পূর্ণ না হোক, আংশিক অন্ধও করে দিও না। আমার চোখে তোমার রঙিন চশমা এঁটে দিও না। বিধাতার রঙে রঙিন পৃথিবী দেখতে আমায় বাধা দিও না - আমাকে প্রাণভরে দেখতে দাও, আমার নিজ চোখে। তেমনি আমায় বুক ভরে জীবন গ্রহণ করতে দাও - স্বচ্ছ সত্য গ্রহণ করতে দাও। তোমার দোষে দুষ্ট - দূষিত পরিবেশে আমায় শ্বাস নিতে বাধ্য কোর না! (more…)

ইসলাম ইসলাম খেলা

ইসলাম ইসলাম খেলা তো অনেক হলো, এবার নাহয় "ইসলাম" শেখা যাক। বহু ব্র্যান্ডের ইসলাম তো দেখা গেলো, এবার না হয় "জেনেরিক ইসলাম" চেনা যাক। অন্ধরা সব হাতী দেখে লোক ডাকলো হাতীর বর্ণনা দেবে বলে, কেউ বললো: কুলার মত কানই হাতী - আবার কেউ বললো: গাছের কান্ডসম পা-ই হাতী। যার মনে যা ধরলো তাই বললো। জীবনে কখনো হাতী-না-দেখা অজ্ঞ মানুষের বিকল্প নেই সে সব শোনা ছাড়া। (more…)

আমার এই ছোট্ট এক টুকরো জমিন

আমার এই ছোট্ট এক টুকরো জমিন- কি এমন মধু রয়েছে তাতে? সেই কবে থেকে বর্গীরা আসছে তো আসছেই হাড় জিরজিরে অবোধ মানুষের সব লুটে পুটে খেতে। আমার এই এক টুকরো ছোট্ট জমিন, ঠিক কবে প্রথম তস্করদের নজরে পড়েছিল? মনে করতে চেষ্টা করি - সে এক বিশাল ধারাবাহিকতা: পলাশী থেকে মাগুরছড়া, টেংরাটিলা কিংবা মন্দিরটিলা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে লুটপাটের উপাখ্যান- কখনো বন্ধুবেশে, কখনো বণিকের বেশে এসেছে লুটেরারা- কখনো ত্রাণকর্তা হিসেবে, আমায় উদ্ধার করতে। (more…)

এই হাত দু’টো কবিতা লেখার জন্য সৃষ্টি হয়নি

এই হাত দু’টো কবিতা লেখার জন্য সৃষ্টি হয়নি। এই মস্তিষ্ক কখনো বুদ্ধিবিক্রীর বেশ্যাবৃত্তি করতে চায়নি। এই মনটা চেয়েছিল নির্ঝঞ্জাট একটা কর্মজীবী জীবন। হাতুড়ী-বাটাল বা অতি সাধারণ আর কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহারে, নিতান্তই ছা-পোষা জীবিকার কোন আয়োজন। মনটা চেয়েছিল, প্রকৃতির মাঝে একাকী, নিভৃত, একটা জীবন। কিন্তু কোলাহোল থেকে বেঁচে থাকা আর হলো না - অগত্যা কলম ধরতেই হলো, নাহলে বন্দুক ধরতে হতো। যারা কথা কইতে জানতো, আর সত্যিই কিছু করতে পারতো, তারা যখন প্রাপ্তির নেশায় চুর - ব্যস্ত টাকা-আনা-পাইয়ের হিসাবে। (more…)

নারীর কোন বিকল্প নেই

কেউ কেউ প্রশ্ন করেন: নারী - তোমার প্রতিশব্দ কি? আসলেই, “নারী”র কি কোন প্রতিশব্দ হয়? শব্দের বিকল্প প্রতিশব্দ - অনেকের মাঝে এক । বিধাতার সৃষ্ট জীবনের নিয়মে নারীর তো কোন বিকল্প থাকার কথা নয়- কথা নয় কোন প্রতিশব্দ থাকার । তবে এটা ঠিক, চেষ্টা চলছে নারীর বিকল্প দাঁড় করানোর । পর্ণোগ্রাফি, সিনেমা, গান, নাটক, বিজ্ঞাপনের ছায়া-চিত্রকে রক্তমাংসের প্রকৃত নারীর বিকল্প হিসাবেই নিবেদন করা হয় । বললেই হলো? আসলেই নারীর কি কোন বিকল্প হয়?? কেউ কেউ কাব্য করে বলেন নারীর প্রতিশব্দ "শক্তি" ও “সুন্দর”! আমিও বলি: "তুমি আছো বলেই পৃথিবী এত সুন্দর!" কিন্তু তাই…continue reading →