মানচিত্রের সবুজ রঙ

একটা স্বপ্ন, যা এই পোড়া চোখে অহরহ ভাসে - কখনো ঘুমের মাঝে দেখি, তবে জেগে থেকে সর্বদাই দেখি। মাঠের পর মাঠ, প্রান্তরের পর প্রান্তর কেবল সবুজ ছড়িয়ে আছে - আমার প্রিয়জনের প্রিয় রঙ, সবুজ ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। অপরূপ, অদ্ভুত একটা স্বপ্ন যা আমার চোখে সর্বদাই ভাসে - মানচিত্রের শত রঙ বিলীন হয়ে যায় মাত্র দু'টি রঙে: একটি সবুজ, আরেকটি কি তাতে আসে যায় না। প্রিয়জনের স্বপ্নের রঙ, সবুজ যেন ছড়িয়ে আছে সর্বত্র - প্রাণের রঙ, জীবনের রঙ সবুজ যেন ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। (more…)

নির্বোধের স্বর্গবাস

একটি বিষাদ ভুলিয়ে রাখতে আমার চারপাশে কত আয়োজন। আমায় সবাই বোঝাতে চায়, আমার কোন ভয় নেই- আমার কিছুই হবে না, যা হবার হবে অন্য লোকের। একটি সত্য ভুলিয়ে রাখতে, আমাকে ঘিরে কত আয়োজন। কখনো ভারত নাট্যম, শাহরুখ-সন্ধ্যা, আবার কখনো কথক নৃত্য অথবা বিশ্বকাপের বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জা- রবীন্দ্র সঙ্গীত সন্ধ্যা, কিংবা ব্রায়ান এডামসের গান- বৈশাখের ইলিশ-পান্তা, নারীর পিঠে উল্কির আহ্বান! সবাই কেবল একটি সত্য ভুলিয়ে রাখতে চায় - সেই সাথে আসলে নিজেরাও ভুলে থাকতে চায়। নেশাগ্রস্তের মতই, অক্ষমতা -অথবা- কিছু না করতে পারার বেদনা - সবাই যেন আপাতত ভুলে থাকতে চায়। (more…)

জীবনে অগ্রগতির সংজ্ঞা

এই ব্লগে বহুদনি ধরেই কিছু সংখ্যক নারী(?) ব্লগারদের মাঝে একটা trend লক্ষ্য করা যায়: একটা "মুসলিম রমণী"সুলভ নিক নিয়ে, ইসলাম এবং মুসলিমদের সবকিছুকে হেয় প্রতিপন্ন করার এমন নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া - যা কেবল নিকৃষ্ট শ্রেণীর ইসলাম-বিদ্বেষী কাফির বা নাস্তিকরা কোন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়েই করে থাকতে পারে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এসব করে অনেক কিছু হাসিল করা গেলেও, এখানে তাদের প্রাপ্তিটা কি আমি নিশ্চিত নই! আমরা জানি তসলিমা নাসরিন থেকে শুরু করে ইরশাদ মানজী, মরিয়ম নামাজী প্রমুখ - সকলের জীবনে "মুসলিম" নাম নিয়ে প্রকাশ্যে "ইসলাম বিদ্বেষ" প্রমাণ করাতে হার্ভার্ডে ফেলোশিপের মত বিশাল বিশাল সব প্রাপ্তি রয়েছে! কিন্তু যখনই ভাবি সোনাব্লগের মত জামাত-শিবির infested বিশ্বাসীদের ব্লগে তাদের প্রাপ্তি কি হতে পারে? তখনই মনে হয়: হতে পারে এখানে তারা "কিছু পেতে আসেন নি" বরং "কিছু পেয়ে এসেছেন" - অর্থাৎ, বিশ্বাসী মুসলিমদের মাঝে সংশয় বপন করে তাদের অবিশ্বাসী বা সংশয়বাদী বানানোর "কাজ" হাতে নিয়ে তারা এখানে এসেছেন এবং কারো payroll-এ থেকে নিষ্ঠার সাথে সে "কাজ" করে চলেছেন। বিলকিস, বেগম, এলিজাবেথ, হেলেনা ইত্যাদি বাহারী মেয়েলী "নিক" আসলে কি বহুজনের না একজনেরই, তা নিয়েও অনেকের সন্দেহ রয়েছে। যাহোক, সোনাব্লগের ইসলাম বিদ্বেষী রমণীদের তালিকায় সর্ব সাম্প্রতিক একজন হচ্ছেন "হেলেনা" ওরফে "হেলেনারা"। আজ তার একটা পোস্ট ( http://www.sonarbangladesh.com/blog/helenara/116102 ) এসেছে, "নাস্তিক চীনের প্রথমবারের মতো সফল স্পেস ডকিং........" - এই শিরোনামে। সেখানে তিনি লিখেছেন: "আমরা মুসলমানরা এখনো একজন ইবনে সিনা কবিরাজের কম্বল জড়িয়ে বিজ্ঞানের তুড়ি বাজাই আর অন্য কে জ্ঞানদান করি। অথচ নিজেদের প্রপ্তি শুন্য। অন্যদিকে সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী গনচীন শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাছ্ছে।" (ভুল বানানগুলোও কিন্তু তার, আমার নয়!!) (more…)

মিলাদুন্নবী পালনের বিধান

মিলাদুন্নবী পালনের বিধান - ১

মূল:শায়খ ড. সালিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান সমস্ত প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য, কল্যাণ ও শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদ(সা.) এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের ওপর। কুরআন এবং সুন্নাহতে খুব স্পষ্টভাবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের নির্দেশাবলী অনুসরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং ধর্মীয় ব্যাপারে নতুন কিছু সূচনা করাকে স্পষ্টত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন: “বলুন [হে নবী]: যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেবেন।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:৩১) “তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল হয়েছে, তোমরা তার [কুরআন ও সুন্নাহ] অনুসরণ কর, আর তাঁকে [আল্লাহ] ছাড়া আর কোন আউলিয়ার [সেই সব সত্তা যারা আল্লাহর সাথে শরীক করার নির্দেশ দেয়] অনুসরণ করো না...” (সূরা আল আরাফ, ৭:৩) (more…)

আর যাকে বলতে চাও বল

সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে তোমার - ফেলানীর মৃত্যুতেই কি মনে হলো? সার্বভৌমত্ব কাকে বলে, তুমি হয়তো তা জানোই না! সে তো কবে কখন হারিয়ে গেছে- সময়ের কোন অদৃশ্য বাঁকে। জন্মের আগেই বুঝি মৃত্যু ঘটেছে তার - ইতিহাস-জরায়ূর অন্ধকার গহ্বরে! হ্যাঁ, আমি অবশ্য সার্বভৌমত্ব বলতে নিঃশর্ত সার্বভৌমত্বই বোঝাতে চাইছি! সে কবে কখন হারিয়ে গেছে- সময়ের কোন অদৃশ্য বাঁকে। আজ পেছন ফিরে খুঁজতে চাইলে গোলক ধাঁধাঁর মত দুর্বোধ্য ঠেকে! (more…)

কুর’আন কিভাবে পড়বো ও বুঝবো

[মূল: Jamaal al-Din M. Zarabozo-র লেখা How to Approach and Understand the Quran] পর্ব-১ [সুচনা] সুচিপত্রের পরেই পর্ব-২ [প্রেহ্মাপট] পর্ব-৩[এই সিরিজের আলোচ্য বিষয়াবলী] পর্ব-৪ [কুর’আনের বৈশিষ্ট্য এবং এর প্রতি আমাদের কর্তব্য] পর্ব-৫ [ আল্লাহ্ কুর’আন সম্বন্ধে কি বলেন] পর্ব-৬[আল্লাহ্ কুর’আন সম্বন্ধে কি বলেন] পর্ব-৭ [কুর’আন সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহর (সা.) বক্তব্য] পর্ব-৮ [যারা কুর’আন জানতেন এবং কুর’আনকে জীবনে ধারণ করেছিলেন, কুর’আন সম্বন্ধে তাঁদের বক্তব্য] পর্ব-৯ [কুর’আনের প্রতি একজন মুসলিমের দায়দায়িত্ব] পর্ব-১০[কুর’আনিক প্রজন্ম : সঠিকভাবে কুর’আনের নিকটবর্তী হবার এবং সঠিকভাবে কুর’আন বোঝার ফলাফল] পর্ব-১১ [রাসূলের (সা.) আগমনের পূর্বের আরবগণ] পর্ব-১২ [রাসূল (সা.) কি উৎসমূল ছিলেন?] পর্ব-১৩ [বর্তমান সময়ে পবিত্র কুর’আনের একই ধরনের প্রভাব নেই কেন?] পর্ব-১৪ [আল্লাহর জন্য বিশ্বস্তভাবে পবিত্র কুর’আনকে অনুসরণ করার চিরস্থায়ী ফলাফল] পর্ব-১৫ [ বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ মুসলিম কি দৃষ্টিতে কুর’আনকে দেখে থাকেন] পর্ব-১৬ [কুর’আন তিলাওয়াত না করা] পর্ব-১৭[কেবল বরকতের জন্য কুর’আন তিলাওয়াত করা বা কাছে রাখা] পর্ব-১৮[কুর’আনকে কেবলি শিফা হিসাবে অথবা শারীরিক অসুখ সারাতে ব্যবহার করা] পর্ব-১৯[‘বৈজ্ঞানিক বিস্ময়’ সনাক্ত করার জন্য কুর’আন পড়া]

কুর'আন কিভাবে পড়বো ও বুঝবো - ১

পবিত্র কুর’আন, দ্বীন ইসলামে এবং ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় যে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে, পৃথিবীর আর কোন একটি ধর্মের বেলায়, সেই ধর্মের ধর্মগ্রন্থকে এ ধরনের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। মুসলিম জীবনে কুর’আনের ভূমিকা কি তা অনুভব করার ব্যাপারটাও হয়তো বা সবার জন্য উন্মুক্ত নয় - অনেকে যেমন মনে করেন যে, কুর’আনের পথনির্দেশনা এবং নিরঙ্কুশ জ্ঞানের ভান্ডারও সবার জন্য উন্মুক্ত নয়, কেবল বিশ্বস্ত বিশ্বাসী বা সম্ভাব্য হেদায়েত লাভের যোগ্যতা সম্পন্ন সৌভাগ্যবানদের জন্যই তা উন্মুক্ত হয়ে থাকে। তেমনি এই ব্যাপারটাও - অর্থাৎ, কুর’আনের ভূমিকার গুরুত্ব বোঝার ব্যাপারটাও - সম্ভবত কেবল নির্বাচিত ও বিশিষ্টদের জন্য নির্ধারিত। ইহুদী বা খৃস্টধর্মাবলম্বী কুফফার ওরিয়েন্টালিস্টগণ - খৃস্টধর্মের উপর যাদের রয়েছে বিস্তর পড়াশোনা - তারা তাদের নিজেদের মত করে ব্যাপারটাকে কিছুটা আঁচ করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন যে, খৃস্টধর্মের বেলায় যীশুর যে গুরুত্ব - ইসলামের বেলায় কুর’আন সেই ধরনের গুরুত্বের অধিকারী। ‘যীশুকে অবতার ভাবার’ মত কুফরে নিমজ্জিত থেকেও, তারা একধরনের ব্যাখ্যা দান করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন যে, যীশু হচ্ছেন ঈশ্বরের Word made flesh, আর কুর’আন হচ্ছে ঈশ্বরের Word made book। খৃস্টানদের এই বক্তব্যে, কুর’আন যে আল্লাহর বাণী এই ধারণার একটা vague স্বীকৃতি রয়েছে বলে, আমাদের অনেকেই ভুলে যাই যে, উপরোক্ত বক্তব্যের প্রথমার্ধে একটা সূক্ষ্ম অথচ ভয়ঙ্কর ‘কুফরি’ রয়েছে এবং আমরা মুসলিমরাও নিজেদের অজান্তেই ঐ কুফরির ফাঁদে পা দিই। কুর’আন আল্লাহর বাণী বলে তা আল্লাহর সিফাতের একটা অংশ এবং সেহেতু divine বা ঐশ্বরিক - অর্থাৎ সৃষ্ট বস্তু নয় ; যীশুও যদি আল্লাহর বাণীর ‘রক্ত-মাংসে রূপান্তরিত অবস্থা’ বা Word made flesh হয়ে থাকেন, তবে তো তিনিও divine বা ঐশ্বরিক এবং সৃষ্ট কোন প্রাণী নন! এখানেই নিহিত রয়েছে এমন ধারণা যা ইসলামের দৃষ্টিতে নির্ভেজাল ‘কুফরি’। (more…)

স্বাধীনতা তুমি কোথায় লুকিয়ে রয়েছো?

[গত ১৫/১২/২০১০ তারিখে অন্য ব্লগে প্রকাশিত - যখন খবর এসেছিল ওরা পাদুয়া দখল করে নিয়েছে] স্বাধীনতা তুমি কোথায় লুকিয়ে রয়েছো? তোমাকে নিয়ে কত কাব্য, কত কথকতা! তুমি কি আজকের খবর পড়েছো? দেখেছো দেশের মানচিত্রের আরেকটি অংশ- কেমন খুবলে ছিঁড়ে খেলো ব্রাহ্মণ্যবাদীরা। এমনিতে ওরা নাকি নিরামিষাশী, নিজের দেশকে "মা" জ্ঞান করে। কিন্তু অপরের মায়ের অংশ বা "মাংস" - অনায়াসে ছিঁড়ে-কুটে খেতে পারে! তুমি কি তাহলে লজ্জায় কোথাও লুকিয়ে আছো? (more…)

অনেকেই দেশটা নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছে

আমাদের জন্মভূমি এই দেশটা - আমরা যাকে বাংলাদেশ বলি; ছোট বা গরীব হলেও, অনেকেই দেশটা নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছে! ড্যানিশ বা সুইডিশ পর্ণো-রাজ্যের বাসিন্দারা - নিজেরা ধর্মকে এক প্রকার তালাক দিলেও - এদেশে জমজমাট ধর্ম-ব্যবসায় খুলে খুবই আশান্বিত - পার্বত্য এলাকায় আরেকটা পূর্ব-তিমোর - এখন বুঝি কেবলই সময়ের ব্যাপার মাত্র - প্রায় অনিবার্য! ছোট বা গরীব হলেও - দেশটা নিয়ে তারা আশায় বুক বেঁধেছে! (more…)

হ্যামিলনের বংশীবাদক

হে শয়তান! তুমিই কি জার্মান রূপকথার সেই বংশীবাদক? হ্যামিলনের ছেলেমেয়েরা যার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিল, হারিয়ে গিয়েছিল অজানা অনন্তে - চিরদিনের তরে! তুমিই কি তবে ভিন্ন ভিন্ন রূপে বার বার ঘুরে ফিরে আসো - পৃথিবীর যত্র-তত্র শহর বন্দর গ্রামে, লোকালয়ে ? নতুন নতুন বাঁশী হাতে, নতুন নতুন সুর নিয়ে? হালে তুমি আমার মুসলিম বাসভূমেও ঘন ঘন আসতে শুরু করেছো, কত রূপে, কত রঙে - কত নতুন সুরের নতুন নতুন বাঁশী হাতে! তুমি চির নিরাশ, নরকের নিশ্চিত অধিবাসী ৷ (more…)

একজন ইদি আমীন ও আমরা……..

ইদি আমীন তখন উগান্ডার প্রেসিডেন্ট। উগান্ডার রাজধানী কাম্পালার মধ্যস্থলে ব্যয়বহুল এক ভাষ্কর্য বানানো হচ্ছে অনেক দিন ধরে, সরাসরি প্রেসিডেন্টের আদেশে। স্বভাবতই নির্মীয়মান ঐ ভাষ্কর্য ঢেকে রাখা হয়েছে - শেষ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচনের জন্য। কাজটা প্রায় শেষ হয় হয় - এরই মাঝে একদিন বুল-ডজার এসে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিল প্রায় শেষ হয়ে যাওয়া মূর্তিটি - তাও প্রেসিডেন্টের সরাসরি আদেশে। ইদি আমীনকে ব্যাপারটা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন যে, মূর্তিটা ছিল বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব হিটলারের - কিন্তু তিনি আগে জানতেন না যে, লোকটি আসলে এত খারাপ ছিল! এখন যখন জেনেছেন, তখন মূর্তিটি আর রাখা যায় না। ঘটনাটা আমি জেনেছি পশ্চিমা মিডিয়ার কাছ থেকে - হলুদ সাংবাদিকতার পথ-প্রদর্শক, ইহুদী নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমা কুফফারদের মিডিয়া কর্তৃক পরিবেশিত এই ধরনের খবর বা গল্পে কিছুটা exaggeration থাকতেই পারে - বিশেষত ব্যক্তিটি যদি তাদের অনুগত না হয়! কিন্তু এর খুঁটিনাটি সত্যাসত্য যাই হোক না কেন - আমি ঘটনাটা বললাম অন্য কারণে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দু'টো ঘটনার সাথে ইদি আমীনের ঐ ঘটনার বেশ সাদৃশ্য রয়েছে বলে। (more…)

করণীয়/বর্জনীয়

করণীয়/বর্জনীয় - ১

১৮ ই নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:১০
আমাদের পাড়ার মসজিদের ৩ নং হুজুর, অনেক সময়ই কোন এক ওয়াক্তের নামাজের পর “বাকী নামাজের পরে বারান্দায় মিলাদ আছে, যে যে পারেন শরীক হতে চেষ্টা করবেন”—এ ধরনের ঘোষণা দিয়ে থাকেন। আমি কখনোই সেই ’যে যে পারেনের’ দলে থাকতে পারিনি, তবে অনুমান করতে পারি যে, ঐ সব মিলাদ খুব সম্ভবত, কারো পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দোয়া চেয়ে, অথবা পরীক্ষায় ভালো করার পর শুকরিয়া জানিয়ে, বা কারো রোগমুক্তির জন্য দোয়া চেয়ে, অথবা কোন মৃত স্বজনের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বা একই ধরনের কোন উপলে আয়োজিত। আমি ভাবতে চেষ্টা করেছি যে, কি ধরনের মানসিক অবস্থায় কোন মিলাদের আয়োজক, অর্থাৎ যিনি মিষ্টি ইত্যাদি বা ঐ মিলাদের আনুষঙ্গিক খরচ বহন করছেন, তিনি এই ’ভাবগম্ভীর’ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছেন? আমি উপরে যে কারণগুলোর কথা উল্লেখ করছি, সে সব কারণে যদি তিনি মিলাদের আয়োজন করে থাকেন, তবে ধরে নিতে হবে যে, তিনি একজন বিশ্বাসী — কারণ, তার কোন উপস্থিত জাগতিক প্রাপ্তি নেই ঐ খরচের বিনিময়ে — তিনি “বিশ্বাস” করছেন যে, তার ঐ পুণ্যময় আয়োজনের বিনিময়ে আল্লাহ্ তাকে কিছু একটা দেবেন। একজন অবিশ্বাসীর জন্যও মিলাদের আয়োজন করা সম্ভব, তবে তা হবে কোন তাৎক্ষণিক জাগতিক অর্জনের জন্য, যেমনটা ধরুন “জনগণকে” ফু্সলাতে ভোটের মৌসুমে কোন অবিশ্বাসী তাগুত নেতাও মিলাদের আয়োজন করতে পারেন। (more…)

হে নাস্তিক…!

হে নাস্তিক! আমি তো তোমার কাছে ঈশ্বর প্রমাণ করতে চাই নি!! তবে কেন তুমি গায়ে পড়ে আমার সাথে ঝগড়া কর, তর্ক জুড়ে দাও? মানব জীবন কেমন হবার কথা - আমি কি তোমার কাছে জানতে চেয়েছি? তবে কেন তুমি তোমার জীবনের অর্থহীনতা দিয়ে, আমার জীবনকে অর্থবহ করে তুলতে চাও? তুমি থাকোনা তোমার অর্থহীন "প্যাঁচাল” নিয়ে - কষ্ট করে চয়ন করা দুর্বোধ্য শব্দে ইনিয়ে বিনিয়ে নারীর দেহ সৌষ্ঠবের বর্ণনা, অথবা, যৌনতার শরীরী প্রকাশ বা প্রেম ভিক্ষা নিয়ে ৷ (more…)

সমুদ্রে জীবন – ১৩

এই সিরিজের লেখাগুলো লিখতে গিয়ে চেস্টা করি, নিজের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বা গাল-গপ্প যেন উঠে না আসে - তথাপি কিছু চলেই আসে! ভ্রমন বা জীবনের কথা যেখানে থাকবে, তা তো কোন না কোন ব্যক্তি-আশ্রিতই হবে! এ পর্যন্ত কারো কাছ থেকে তেমন কোন আপত্তির আভাষ পাই নি - তবু, কারো বিরক্তি লাগলে নিঃসঙ্কোচে জানাবেন - ইনশাল্লাহ্, তখন আরো নৈর্ব্যক্তিক করার চেষ্টা করবো! আমি চেস্টা করছি একজন নাবিকের জীবনটা সমুদ্রে কেমন কাটে/কাটলো - চড়াই-উৎরাই পার হয়ে একজন মানুষ হিসাবে তার জীবন কি ভাবে evolve করে - সে সম্বন্ধে একটা ধারণা দিতে - লেখার পেছনে কলম (বা কী-বোর্ড) হাতে মানুষটা ঠিক কে - irrespective of that যেন ব্যাপারগুলো বোধগম্য হয় বা উপস্থাপনযোগ্য হয়! (more…)
সমুদ্রে জীবন – ১২

সমুদ্রে জীবন – ১২

"সমুদ্রের অনেক রূপ, অনেক রং - প্রতিনিয়তই তার রূপ ও রং বদলাতে থাকে। অনেকে মনে করেন সমুদ্রগামী মানুষের জীবন কি একঘেঁয়ে আর বিরক্তিকর হবার কথা - যে দিকে তাকাবে সেদিকেই তো সে শুধু সীমাহিন জলরাশি দেখবে। এটা ঠিক যে, কোন কোন মানুষের চোখে সমুদ্রের অগণিত ভিন্ন রূপ ধরা নাও পড়তে পারে। তবে যাকে আল্লাহ্ দৃষ্টি দিয়েছেন - সে দেখবে আপাত দৃষ্টিতে বৈচিত্রহীন সীমাহীন জলরাশি মনে হলেও, সেখানে কোন দুইটি সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয় একরকম নয়, যেমন একরকম নয় কোন দুটি ভোর বা সন্ধ্যার আকাশের রং। আর জলরাশির রং? সেটার বৈচিত্র ভাষায় বোঝানো কঠিন - হালকা নীল থেকে শুরু করে সবুজ পর্যন্ত যত shade হতে পারে তার সব তো দেখা যায়ই - আবার আবহাওয়ার ও পানির গভীরতার পরিবর্তনের সাথে সাথে গাঢ় নীল থেকে প্রায় কালো রং ধারণ করে সমুদ্র-জলরাশি। বৈচিত্রের আরেকটা দিক হচ্ছে জলের surface-এর চেহারা। কখনো তা কাঁচের মত সমতল - জাহাজের গতিকে তখন খুব নিষ্ঠুর মনে হয়, সেই কাঁচের মত সমতল নিরবচ্ছিন্নতাকে ভেঙ্গে এগিয়ে যায় বলে। আবার ঐ একই সমতল কিছুক্ষণ পরেই হয়তো কয়েক মিটার উচ্চতার অগণিত ঢেউয়ে ভরে যায়।" প্রথম যখন সমুদ্র নিয়ে লিখবো ভেবেছিলাম, তখন উপরের কথাগুলো লিখে এমন একটা ব্লগে খসড়া হিসেবে save করে রেখেছিলাম, যার system-টা বেশ user friendly মনে হয়েছিল। সেই user friendly মনে করাটাই আমার জন্য কাল হলো। বেশ ইনিয়ে বিনিয়ে - অসুরের সুর সৃষ্টির প্রচেষ্টার মত করে - "সমুদ্রে জীবন-১২" একটু একটু করে লিখছিলাম bits and pieces-এ । লেখার পরে save করতে ভুল হতো না । কিন্তু হঠাৎ একদিন save করতে গিয়ে কোন bug-এর কারণে এক অদ্ভূত ব্যাপার ঘটলো - পুরা লেখাটা হারিয়ে গিয়ে একটা "no title" শিরোনামের খালি পাতা আসলো। সেদিনের কাজের আগের অনেকটুকু কাজও সাথে হারিয়ে গেল। ঐ ব্লগের support team-কে জানালাম। তারা রেসপন্স করতে করতে দুই/তিন দিন চলে গেল। বললো, চেষ্টা করে দেখবে উদ্ধার করা যায় কি না - কিন্তু শেষ পর্যন্ত একদিন জানালো কিছুই করার নেই। ছাত্র-জীবনে আমি সব সময় চাইতাম, পরীক্ষাগুলো যথাসময়ে হয়ে শেষ হয়ে যাক। পূর্ণ প্রস্তুতির পরে যখন অন্যান্যদের প্রস্তুতি হয়নি বলে শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা বাতিল হতো - তখন খুব হতাশ লেগেছে সব সময়। লেখাটা হারিয়ে গেলে অনেকটা সে রকম অনুভূতিই হলো আমার। গোটা রমযান মাসে আর লেখাটা পুনরায় শুরু করার কোন এনার্জি বা সময় পেলাম না! যাহোক, আগের মূল লেখাটার মত না হলেও, চেস্টা করবো "সমুদ্রে জীবন-১২" লেখাটাকে reconstruct করতে। "সমুদ্রে জীবন - ১১" -তে San Francisco Bay Area নিয়ে কথা হচ্ছিল। ওখানে যেতে শুরু করার ঠিক আগে আগে আমি দূর-প্রাচ্য থেকে ইউরোপের মাঝে যাতায়াতকারী একটা বড় কন্টেইনার জাহাজে ছিলাম - in fact ওটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় container জাহাজ। ঐ জাহাজটায় আমি বহু বছর পরে, আবার "জাহাজে করে" ইংল্যান্ডে যাই। এর আগে পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডের উত্তরপূর্ব অংশের একটা শহরে বেশ কিছুদিন ছিলাম। সিলেটি হবার বদৌলতে, UK-তে আমার অনেক আত্মীয়স্বজন থাকলেও, পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে থাকা সময়টাতে কেন যেন আত্মীয়-স্বজন - এমন কি অন্য শহরে থাকা বন্ধুদেরও তেমন একটা খোঁজ-খবর নেয়া হয় নি। আমার বেশ মনে আছে, আমার বেশ কাছের একজন বন্ধু - আমারই মত - পেশাগত পড়াশোনার জন্য তখন Southampton-এ থাকতো। আমি পরীক্ষা ইত্যাদি শেষে যেদিন দেশে চলে আসবো, তার আগের দিন Southampton-এ তার কাছে গিয়ে তার বাসায় থাকলাম - সে আমাকে পরদিন তার গাড়ী করে Heathrow-তে তুলে দিয়েছিল - ব্যস ঐ পর্যন্তই। আমি কিন্তু কখনো তখন London-এ আমার কয়েক ডজন আত্মীয় স্বজনের কারো খোঁজও নিই নি - বা কারো বাসায় যাইও নি। এ নিয়ে তাদের কেউ কেউ বেশ মনক্ষুণ্ণ হয়েছেন। এরপর তাদের কেউ কেউ প্রায়ই খোঁজ নিয়েছেন আমি আর UK যাই কি না । আমাদের কোম্পানীর জাহাজগুলো তখন UK-র ২টা বন্দরে যেতো - Felixstowe এবং Southampton। আমার জাহাজটার loop-এ তখন Felixstowe অন্তর্ভুক্ত ছিল। Felixstowe-র ঠিক আগের port ছিল জার্মানীর Hamburg। ঐ loop-এ প্রথম voyage-এ, জাহাজ Hamburg থাকতেই, ছেলেবেলায় আমাকে খুব আদর করতেন, আমার এমন এক মামার (আপন মামা নন) সাথে কথা-বার্তা ঠিক হয়ে রইলো - আমি সুযোগ পেলে Felixstowe থেকে London-এ তার কাছে বেড়াতে যাবো। তিনি আমাকে Felixstowe থেকে London-এর ট্রেনে London (Liverpool street) যাবার পদ্ধতি বাতলে দিলেন। বললেন Liverpool street-এ গিয়ে তাকে একটা ফোন করে তবে টিউবে উঠতে। টিউব রেলে ওখান থেকে আমি King's Cross -এ পৌঁছানোর আগেই, তিনি ঐ স্টেশনে এসে থাকবেন - বলা বাহুল্য যে, তার বাসা King's Cross -এর খুব কাছের একটা রাস্তা Wharton Street-এ অবস্থিত। ঐ মামাই আমার UK-তে অবস্থিত সবচেয়ে ঘনিস্ট রক্তসম্পর্কীয় নন - আমার ১টা আপন খালাত ভাই এবং ২টা আপন মামাতো বোনও ওখানে থাকতো/থাকে। তথাপি ঐ মামাকেই আমার সবচেয়ে কাছের মনে হতো, আমার সবচেয়ে ঘনিস্ট রক্তসম্পর্কীয় না হলেও, তিনি ছিলেন আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ট আত্মীয় - আত্মার সম্পর্কের দিক থেকে সবচেয়ে কাছের। যাহোক, এখানে উল্লেখ্য যে container জাহাজের নাবিকদের জীবনে "বন্দরে অবস্থানের সময়টা" অত্যন্ত মূল্যবান - যে তুলনায় পশ্চিমা জগতের আপাত দ্রুতগতি জীবনটাকেও অনেকসময় ঢিলে-ঢালা মনে হতো। যেমন ধরুন Felixstowe, বন্দর হিসেবে বড় হলেও শহর হিসেবে "ছোট্ট একটা মফোস্বল" শহর বলা যায়। সকাল ৬টার দিকে ওখান থেকে Ipswich পর্যন্ত একটা ২ বগির ধীর-গতি ট্রেন চলতে শুরু করে, যা রাত ১০টার পর পর বন্ধ হয়ে যায় - তাও আবার ঘন্টায় একটি মাত্র ট্রেন - যা ২৬ মিনিটে Felixstowe থেকে Ipswich যায়। একটা ট্রেন কোন কারণে মিস করলে, পাক্কা এক ঘন্টা সময় - আপনার "বন্দরে স্বল্প অবস্থানের অবকাশ" থেকে হারিয়ে গেল। তখন রাগে-দুঃখে আঙ্গুল কামড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। Ipswich থেকে London অবশ্য ঘন ঘন ট্রেন পাওয়া যায় - যেগুলো Norwich বা অন্যন্য শহর থেকে Ipswich হয়ে যাতায়াত করে। Ipswich থেকে London যেতে ১ঘন্টা ১০ মিনিটের মত সময় লাগে। খুব ভালো ভাবে প্ল্যান করতে পারলে ২ ঘন্টায় জাহাজ থেকে London (Liverpool street)-এ পৌঁছানো যায়। কখনো এমন হয়েছে যে, আত্মীয় স্বজনের সাথে একটু বেশী সময় কথা বলার খেসারত দিতে হয়েছে - ফেরার পথে রাতে Ipswich থেকে Felixstowe-র ট্রেন মিস করে ২৬/২৭ পাউন্ড টেক্সি ভাড়া গুনে। প্রথম যেবার জাহাজ থেকে মামার বাসায় গেলাম, সেবার অনেক অজানা বিষয় ছিল - যেগুলোর জন্য কিছু বাড়তি সময় ক্ষেপনও হয়েছে। প্রথমবারের পর, ঐ বিষয়গুলো আর কোন factor হয়ে দাঁড়ায় নি। যেমন ধরুন টিউব ধরে King's Cross না গিয়ে Liverpool street থেকে একটা টেক্সি ধরে সরাসরি মামার বাসায় চলে গেলে, আমার অনেকটুকু দুর্লভ সময় বেঁচে যেতো। প্রথম যেবার ওভাবে মামার কাছে গেলাম, মামা তার বড় মেয়েকে নিয়ে King's Cross-এ এলেন আমাকে নিয়ে যেতে - আমাকে বললেন সাব-ওয়ে থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে থাকতে। কিন্তু নিজেই আর সেখানে থাকলেন না। আমার দেরী হচ্ছে ভেবে, টেনশনে, নেমে গেলেন প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশ্য - আরো একটা কারণও ছিল তাঁর টেনশনের: প্রায় ২৭ বছর পর আমাকে দেখে তিনি চিনবেন কি না! প্ল্যাটফর্মে আমাকে না পেয়ে, আবার হন্তদন্ত হয়ে উপরে ছুটে আসলেন - কন কনে শীতে আমাকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ধরে নিলেন আমিই তার আত্মীয় - আমি অবশ্য একমুখ পাকা দাড়ি সমেতই তাকে চিনতে পারলাম। মামার মেয়ে আমাদের ড্রাইভ করে তাদের বাসায় নিয়ে গেলো। পথে তিনি দেশী দোকান থেকে দেশী বড় মাছ কিনলেন। বাসায় গেলে রীতিমত উৎসবমুখর পরিবেশে তিনি, তার স্ত্রী (যিনি অন্য সম্পর্কেও আমার আত্মীয়া), তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে এবং তার মেয়ে-জামাই (আমার আপন খালাত ভাই ) সবাই মিলে আমাকে ঘিরে ধরে বসে চুটিয়ে আড্ডা দিতে শুরু করলো - London-এর Wharton Street-এর ঐ বাসাটা কয়েক ঘন্টার জন্য একটা মিনি সিলেটে রূপান্তরিত হলো। আড্ডার মুখ্য subject-টা অবশ্য বেশ ব্যতিক্রমী একটা বিষয় ছিল - আমরা প্রায় সারাক্ষণই "ইসলাম" নিয়ে কথা বলছিলাম! ইউরোপ আমেরিকায় ছড়িয়ে ছিঠিয়ে থাকা আমার অগণিত আত্মীয়-স্বজনের ভিতর ঐ পরিবারটিই ছিল একমাত্র পরিবার, যাদের সত্যিকার অর্থে অনুশীলনরত "মুসলিম" বলা যায়। ৫৬ দিন পরে, ইনশা'আল্লাহ্, "আবার আসিব ফিরে" - এমন একটা কথা দেয়া-নেয়ার ভিতর দিয়ে আমাদের ঐ দিনের আড্ডার অবসান হলো। এর মাঝে সিলেটি রেসিপির "হাতকরা", শুটকি আর বড় মাছ ভাজা - এধরনের অনেক আইটেমের খাওয়া-দাওয়া হলো। এরপর ঐ জাহাজে বা অন্যান্য জাহাজে আরো বহুবার ঐ বাসায় যাওয়া হয়েছে। কখনো ওখানে গোটা দিন বা overnight-ও থেকেছি। Felixstowe-র Trinity Dock -এর কন্টেইনার বার্থগুলোর একটা দুর্বলতা ছিল - সমুদ্রের হাওয়ার কাছে উন্মুক্ত বলে, আবহাওয়া খারাপ থাকলে একটু ঝড়ো হাওয়া বইলে gantry craneগুলো আর operate করতো না। এমনও হয়েছে যে, কোন কার্গো ওঠানামা ছাড়াই, জাহাজ হয়তো ২৪ বা ৩৬ ঘন্টা এমনি বসে থেকেছে - যেটা কোন লাইনার container জাহাজের জন্য এক বিরল ব্যতিক্রম। আমার জন্য সেটা সব সময়েই অনেকটুকু বাড়তি সময় London-এ থাকার একটা সুযোগ হয়ে এসেছে। ঐ পরিবারের সাথে জাহাজী জীবনে আবার নতুন করে পরিচিত হওয়াটা আমার জীবনের একটা turning point হয়ে যায়! (more…)

আবদুল্লাহ আল মনসুর ও একজন ইউসুফ ইসলাম

রমযান মাসে জীবনে সময়ের অভাব দেখা দেয় - যে কোন ভালো মুসলিমের তো বটেই - আমার মত সাধারণ মুসলিমেরও। আমি তাই ভেবেছিলাম, রমযান মাসে আর কোন পোস্ট দেব না - নিতান্ত যদি দিইও, তবে তা হবে pure ধর্ম্-কর্ম নিয়ে। কিন্তু "সামু"র জনপ্রিয় ব্লগার আবদুল্লাহ আল মনসুর-এর "মহান আল্লাহ্ পাকের অশেষ রহমতে বিরাট দুর্ঘটনা হতে বেঁচে আসলাম" - এই শিরোনামের একটা পোস্ট পড়ে মনে হলো, এই লাইনে কিছু লেখা যেতে পারে। এখনই না লিখলে চিন্তাটা হয়তো সময়ের সাথে হারিয়েও যেতে পারে - তাই এখনই লিখতে বসলাম। আমি জানি তার সমকালীন অনেক ব্লগীয় বন্ধু - যাদের সাথে তিনি হর-হামেশা ভাব বিনিময় করে থাকেন, তারা নাস্তিক বা এগনোস্টিক। কিন্তু আবদুল্লাহ আল মনসুর বিশ্বাসী - আর সেই বিশ্বাস প্রকাশ করতে তিনি কখনো কূন্ঠা বোধ করেন না! আমার অনেক কয়টা সেকেলে পোস্টে এসে তিনি ইতিবাচক মন্তব্য বা রেটিং দিয়ে গেছেন - আমি তখনই নিশ্চিত হয়েছি যে, তিনি আল্লাহয় বিশ্বাস করেন এবং তা নিয়ে লজ্জিতও নন। ব্লগে স্মার্ট্ বা সুশীল হতে হলে ধর্মানুভুতি না থাকা অথবা ধর্মানুভূতিকে কটাক্ষ করাটা যে একটা শর্ত - তিনি বোধহয় সেটা মনে করেন না। তবু "মহান আল্লাহ্ পাকের অশেষ রহমতে বিরাট দুর্ঘটনা হতে বেঁচে আসলাম" শিরোনামের ভিতর যে গভীর কৃতজ্ঞতাবোধ ফুটে উঠেছে, তা হয়তো অনেককেই থমকে দেবে - অনেকটা ধরুন, যদি রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলনে, সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমীতে গান শুনতে গিয়ে দেখেন যে, স.ম. তুকীউল্লাহ্ তার (more…)

কতটুকু, কতক্ষণ…

বেঁচে থাকা হয়তো জরুরী - তবে কতটুকু? মরে যাওয়া হয়তো ভয়ের - তবে কতটুকু? প্রতিদিন দানবের হাতে মানবের নিগৃহীত হবার ছবি, অথবা খবর ৷ প্রতিদিন বান্দরের হাতে সুন্দরের অপমানিত হবার ছবি, অথবা খবর ৷ তারপরও বেঁচে থাকা কি এতটা জরুরী? তারপরও মরে যাওয়া কি এতটা ভয়ের? তারাবীর জামাতে দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া ভার - অথচ মিডিয়ায়, পত্রিকায়, নাস্তিকের হাতে বিশ্বাসীর সকাল-বিকাল নিগৃহীত হবার, অথবা, মিথ্যার কাছে সত্যের পরাজিত হবার কত সমাচার! এখনকার দুঃসময়ে বুঝেও না বোঝার ভান করা হয়তো জরুরী - তবে কতক্ষণ? স্বাধীনতার গান গাইতে গাইতে, শৃঙখলিত হওয়াও হয়তো কৌশল - তবে কতক্ষণ?…continue reading →

জীবনের countdown

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা! আমরা হয়তো খেয়াল করি না বা ভেবে দেখার অবকাশ নিই না যে, জন্মলগ্ন থেকে আমাদের জীবনে এক ধরনের countdown শুরু হয়ে যায়। যার আয়ু ৬০ বছর, তার জীবন "রাফ" হিসাবে ১৮৯,২১,৬০,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। সুতরাং ব্যাপারটা এরকম যে, অদৃশ্য কোন ডিজিটাল ঘড়িতে বুঝিবা তার জীবনের countdown শুরু হয়েছিল ১৮৯,২১,৬০,০০০ থেকে - এখন হয়তো ৯,২১,৬০,০০০-তে পৌঁছেছে - তার অজান্তে কমতে কমতে '০'-তে পৌঁছালেই সবশেষ! NASA-র মহাকাশযানের launchpad থেকে মহাকাশযানগুলোর যেমন উৎক্ষেপন হয়, তেমনি আমাদের দেহের launchpad থেকে প্রাণগুলো যাত্রা করবে অসীমের পানে - one way journey! এভাবে ভাবলে, কোন মুসলিম তার জীবনের সাধারণ দিনরাতগুলোও হেলা ফেলায় কাটাতে পারে না! আর রামাদান মাস হচ্ছে বিশেষ একটা সময় - অন্য সময় কেউ যদি তার জীবনের সময়রূপ নিয়ামত হেলা-ফেলায় নষ্ট করেও থাকে, তবে তা compensate-করার একটা চমৎকার সুযোগ আসে এসময়ে। অথচ, এই ব্লগের কত মুসলিম ভাই-বোনেরা কত তুচ্ছ ও অর্থহীন বাক-বিতন্ডায় এই পবিত্র রামাদান মাসের অমূল্য সময়গুলো কাটিয়ে দিচ্ছেন। নীচে উদ্ধৃত হাদীসটা একটু খেয়াল করে পড়ুন: (more…)

“ওদের” মত হতে চাওয়া এই “আমরা”

কাক ময়ূর হতে চায়, এমন কথা শোনা যায়; কিন্তু ময়ূরের কাক হতে চাওয়া ? এখনকার দুঃসময়ে, তাও শোনা যায় ! চারিদিকে অগণিত কাকের কা কা রব, আর তীক্ষ্ম ঠোটের সম্মিলিত আঘাত - এসব থেকে বাঁচতে, ময়ূরও কাক হতে চাইতে পারে – আর কখনো সত্যিই চায় ! নিজের ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্য, বেশ-ভূষার দাবী - সব বিসর্জন দিয়ে কাকের দলভূক্ত হবার আকুতি – বিশ্বাসী মুসলিমের সুশীল হবার করুণ প্রচেষ্টা ৷ কিন্তু শয়তানের সাথে মানুষের যে চিরন্তন যুদ্ধ, তার কি হবে ? মানুষ যদি শয়তানই হতে চাইবে, তবে তো শুরুর আগেই সে যুদ্ধ শেষ - যেন স্বেচ্ছায় হার মানা হার পরে নেয়া ৷ ইসলামী নৃত্য, ইসলামী গীত, ইসলামী টেলিভিশন, ইসলামী নাটক কিংবা ডেটিং-এর ইসলামীকরণ - আরো কত কি – টিকে থাকতে ময়ূরের কাক হতে চাওয়া ৷ যেন শুরুর আগেই অঘোষিত যুদ্ধে হার মেনে নেয়া ৷ যে শত্রুর মত হতে চায়, তাকে দিয়ে কি যুদ্ধ হয়? সে তো যুদ্ধের আগেই বিজিত, পরাজিত – জীবন সংগ্রামে “ওদের” মত হতে চাওয়া এই “আমরা”!! চলনে বলনে “ওদের” মত হতে চাওয়া এই “আমরা”!! চিন্তায় চেতনায় “ওদের” মত হতে চাওয়া এই “আমরা”!! (more…)
সমুদ্রে জীবন – ১১

সমুদ্রে জীবন – ১১

সে বার ছোট বুশ প্রথম যখন নির্বাচনে জেতেন, তখন আমরা ছিলাম ক্যালিফোর্নিয়ার Oakland-এ। আমি বাইরেও গিয়েছিলাম, কিন্তু রাস্তাঘাটে এমন কিছুই চোখে পড়ে নি, যা দেখে মনে পড়বে যে নির্বাচন চলছে। আর কন্টেইনার জাহাজের স্বল্প সময়ের বন্দর উপস্থিতির মাঝে কেউ টেলিভিশন দেখে না। যা হোক, নির্বাচনের পরের দিন ভোরে আমরা Oakland থেকে sail করলাম Taiwan-এর Kaohsiung বন্দরের উদ্দশ্যে। জাহাজকে বন্দর থেকে, বাইরে অর্থাৎ সমুদ্রে রেখে আসতে একজন Pilot যথারীতি জাহাজে এলেন। যারা নতুন নতুন আমাদের কাছ থেকে জাহাজী গল্প শুনছেন, তাদের অবগতির জন্য বলছি যে, যে কোন বন্দরে, যে কোন বার্থে যাবার জন্য ঐ বন্দরের কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এক বা একাধিক ব্যক্তি, বহির্নোঙরে বা সমুদ্রেই জাহাজে আরোহন করেন - পথ-দেখিয়ে-নিয়ে-যাওয়া ঐ সব লোককে জাহাজী ভাষায় Pilot বলা হয়। সাধারণত দ্রুতগামী Pilot Boat-এ করে এসব Pilot-রা সমুদ্রের গভীরে ২/১ মাইল থেকে শুরু করে অনেক সময় প্রয়োজনে ৮/১০ মাইল দূরে গিয়ে জাহাজে ওঠেন - অথবা - বন্দর ছেড়ে যাবার সময় তারা বার্থে এসে জাহাজে ওঠেন, তারপর জাহাজটাকে সমুদ্রে নিরাপদ দুরত্বে নিয়ে গিয়ে, সেখানে জাহাজ থেকে নেমে অপক্ষমান Pilot Boat-এ করে আবার বন্দরে ফিরে আসেন । (more…)

সাধারণ মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি লিংক

এখনকার দুঃসময়ে, আমরা সাধারণ ও "নাম মাত্র" মুসলিমরা, নিজেদের দ্বীন, অর্থাৎ, ইসলাম সম্বন্ধে বলতে গেলে কিছুই জানি না। অথচ, অনেকেরই উত্তরাধিকার অথবা অভ্যাসবশত ইসলামের প্রতি এক ধরনের মমত্ববোধ থাকে। কোন একটা ইস্যুতে যখন কাফির-মুশরিক-নাস্তিকরা,** ইসলাম বা ইসলামকে-ভালোবাসা কোন মুসলিমের উপর চড়াও হন, তখন তাদের হৃদয়ে একধরনের রক্তক্ষরণ হয়। অথচ, তারা বোঝেন না, বা ভেবে পান না যে, কোথায় গেলে তারা একটু আশ্রয় পাবেন - কে তাদের মনে নাস্তিক-সৃষ্ট সংশয় বা সন্দেহগুলো নিরসন করে একটু প্রশান্তি এনে দেবে। এই তো দু'দিন আগেও হঠাৎই একটা ফিৎনা দেখা দিল। সারা জনমের জানা তথ্যের ভিত যেন নড়ে উঠলো - একদম অনাকাঙ্খিত একটা গোষ্ঠী থেকে কেউ "ফতোয়া" দিতে চাইলো: ইসমাঈল (আ.) নন বরং ইসহাক (আ.)-কে কুরবানী করার কথা ছিল। (more…)