প্রিয় ভাই-বোনেরা,

السلام عليكم ورحمة الله و بركاته

[কি অদ্ভূত ব্যাপার! ইসলাম ভিত্তিক ব্লগের সদস্যরাও একে অপরকে সালাম দেন না!! আমি তো জানতাম কেবল তসিলমা নাসরীন, জাফর ইকবাল গং-দেরই সালাম দিতে লজ্জা লাগে। সালাম একটি দোয়াও বটে। নিজের খালি ঘরে ঢুকতেও সালাম দেয়াটা সুন্নাহ্।]

অগ্রাধিকার প্রসঙ্গে যাবার আগে চলুন “জ্ঞান অর্জন ফরজ” পর্বটা সেরে নেয়া যাক। এই বহুল প্রচলিত কথাটা আসলে, কোন জ্ঞান বোঝায় সেটা জানাটা প্রতিটি মুসলিমের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

নবী পয়গাম্বরেরা যুগে যুগে মানুষের মাঝে কি বাণী প্রচার করতে এসেছিলেন? তাঁদের বাণী মূলত তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতো: তৌহিদ, আখেরাত ও রিসালাত। বিশ্বাসীদের সকল কর্মকান্ড, অপরিমেয় ও সীমাহীন সময়ের পরকালের প্রাপ্তির আশা অথবা শাস্তির ভয় দ্বারা motivated । ইসলামী বিশ্বাস মতে বিশ্বাসী,অবিশ্বাসী, দীন-মজুর, কোটিপতি, ডক্টরেট বা নিরক্ষর সকলকেই পরকালের যাত্রার শুরুতেই অতি অবশ্যই এবং অনিবার্যভাবে তিনটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে:

১)আপনার রব বা প্রতিপালক কে?
২)আপনার দ্বীন কি বা কোনটি?
৩)রাসূল (সা.)-কে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে,”ইনি কে?”

আপাত দৃষ্টিতে আপনার মনে হবে যে,একটা ছোট্ট ছেলে, যার জন্য প্যান্ট পরাটা এখনো বধ্যতামূলক নয়, সেও তো এসব প্রশ্নের উত্তর অনায়াসে বলে দিতে পারবে। কিন্তু আসলে ব্যাপরটা অত সোজা নয়।

ধরুন আপনার ক্লাসের বা অফিসের একটি ছেলের নাম হামিদ। আমি যদি একদিন আপনার ক্লাসে গিয়ে বসি এবং আপনি যদি অনির্দিষ্ট দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন, “হামিদ তুমি মেহমানকে এক গ্লাস পানি এনে দাও”; আমি সবার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করবো আপনি ঠিক কাকে কথাটা বললেন। কেন? কারণ, আমি হামিদকে চিনি না। একইভাবে এই দুনিয়ার জীবনে আমি যদি আল্লাহর পরিচয় সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করে না থাকি, তবে আমি বলতে পারবো না আমার প্রতিপালক কে । আবার আমার দ্বীনে ঘোষিত ফরজ, ওয়াজিব, হালাল -হারাম, করণীয়-বর্জনীয় ইত্যাদি যে সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন, আমার ইসলাম সম্মত জীবন যাপনের জন্য জানাটা অত্যাবশ্যকীয় ছিল, সে সব না জেনে থাকলে আমি আমার দ্বীন কি সেটা বলতে পারবো না। একইভাবে রাসূল (সা.) যেভাবে ইসলাম প্রয়োগ করে দেখিয়ে গিয়েছেন – সেই প্রায়গিক রূপ বা সুন্নাহ্ সম্বন্ধে জ্ঞান না থাকলে, তাঁকে দেখেও চিনতে পারবো না আমরা। এখানে ফেল করলেই “আপনার জীবনের [এবং মরণেরও] ষোল আনাই মিছে” – আর কিছুতেই কিছু হবার নয়। এখানে বিফল লোকেরাই বোধকরি বলবে যে, ধিক্ আমাকে! আমি যদি শ্রেফ মাটি হয়ে যেতাম!! (কুর’আন, ৭৮:৪০)

এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে যতটুকু জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন ততটুকু জ্ঞান নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরনীয়।

আর তাই ঈমানেরও পূর্বের করণীয় হচ্ছে জ্ঞান অর্জন। কারণ আপনি যদি আল্লাহর পরিচয়ই না জানেন, তবে কোন আল্লাহর উপর ঈমান আনবেন? রাসূল(সা.)-এঁর আল্লাহ নাকি আবু জাহলের আল্লাহ্? দুজনেই কিন্তু আল্লাহকে আল্লাহই ডাকতেন – অথচ একজন নবী, অপরজন মুশরিক। তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সম্বন্ধে তাদের concept ভিন্ন ছিল!

সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাবার বিষয়টা তাহলে জানা গেল – আল্লাহ, তাঁর দেয়া দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা এবং তাঁর রাসূলের পরিচয় জানতে হবে। এ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করাটাই তাহলে সবচেয়ে বেশী অগ্রাধিকার পাবার দাবীদার।

ফি আমানিল্লাহ্!

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *