বাসা ভাড়া এবং বাসা ছাড়ার নোটিস সংক্রান্ত
প্রশ্নঃ আমি এক বাসায় ভাড়ায় থাকতাম। চাকুরী পরিবর্তনের কারণে বাসাও পরিবর্তন করতে হয়। বাড়ির মালিকের সাথে কোন স্পেশাল চুক্তি ছিল না। আমি স্বাভাবিকভাবে এক মাস আগেই জানিয়ে দেই যে আমি বাসা ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু বাড়ীওয়ালা আমাকে বলে ২ মাস আগে বলতে হবে অথবা, এক মাসের ভাড়া এক্সট্রা দিয়ে যেতে হবে। আমি না দিয়েই একটু ছল চাতুর্যের মধ্যদিয়ে বাসা ছেড়ে দিই। এটা কি আমাকে ইসলাম সমর্থন করে? আমি কিন্তু ১ মাসের ভাড়া দিয়েই এসেছি; ২ মাসের আগে দিই নি। কিন্তু বাড়িওয়ালা ২ মাসের ভাড়া দিতে বলেছিলেন।
উত্তর দিয়েছেন ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ
উত্তরঃ আপনার প্রশ্ন থেকে বুঝা যাচ্ছে বাড়ির মালিকের সাথে আপনার প্রকাশ্য চুক্তি হওয়া দরকার ছিল। চুক্তি না হওয়ার কারণেই মূলত বাড়ির মালিক আপনাকে দুইমাস আগে বাসা ছেড়ে দেয়ার কথা জানাতে বলেছেন অর্থাৎ এই সুযোগটুকু পেয়েছেন। আপনি যদি ছল-চাতুরির আশ্রয় না নিতেন তাহলে সেটাই আপনার জন্য ভালো হতো। এ কাজটি আপনার জন্য জায়েয হয়নি। কারণ এতে আপনি এক প্রকারের প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। তবে যেহেতু আপনি এক মাসের ভাড়া দিয়ে এসেছেন তাই এটা বলা যায় যে, বাড়ির মালিকের যে হকটুকু ছিল সেটি আপনি আদায় করে দিয়ে এসেছেন। সেক্ষেত্রে আপনি গুনাহগার হবেন না ইনশাআল্লাহ্। তবে যেকোনো ধরনের চালাকি অথবা প্রতারণার আশ্রয় নেয়া ইসলামী শরিয়তের মধ্যে হারাম। কেননা, সহিহ মুসলিমের রেওয়াতের মধ্যে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
من غشنا فليس منا
“যে আমাদের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিল সে আমাদের দলভুক্ত হতে পারবে না।” তাই এক্ষেত্রে প্রতারণার আশ্রয় না নিয়ে যদি আপনি বাড়ির মালিকের সাথে বসে একটা সুন্দর সমাধান করতেন তাহলে সেটা আপনার জন্য সবচেয়ে উত্তম হতো। এখন বাড়িওয়ালা হয়তো আপনাকে প্রতারক মনে করতে পারেন। তাই আপনার সেখানে এক মাসের ভাড়া দেয়ার সময় বলা উচিত ছিল যেহেতু আমি একমাস আগেই বাসা ছেড়ে দেয়ার কথা বলেছি তাই একমাসের ভাড়া নিয়েই আপনি আমাকে বিদায় দিন। যদি এক্ষেত্রে তিনি বাড়াবাড়ি করতেন তাহলে তার এই বাড়াবাড়ি জায়েয হতো না৷ কারণ, আমরা জানি ইসলামী শরিয়তের মধ্যে হুকুক বা বান্দার হক নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করে থাকেন তারা কবীরা গুনাহগার হবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। এখানে আপনার অবস্থানটুকু হকের দিক থেকে যথাযথ আছে যেহেতু আপনি এক মাসের ভাড়া দিয়ে এসেছেন। কিন্তু সেখানে এতটুকু চালাকি করাটা আপনার জায়েয হয়নি। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের সবাইকে সকল ক্ষেত্রে ইসলামের যেই নির্দেশনা আছে সেগুলো মেনে চলার তৌফিক দান করুন। আমীন।