প্রশ্নঃ আমরা সবসময় জেনে এসেছি বা শুনে এসেছি যে ফির’আউন নীল নদে ডুবে মারা গিয়েছে। কিন্তু এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারছি যে ফির’আউন লোহিত সাগরে ডুবে মারা গিয়েছে। আসলে কোনটি সত্য?

উত্তর  দিয়েছেন ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ

উত্তরঃ ফির’আউন লোহিত সাগরে ডুবে মারা গিয়েছে এটিই সঠিক বক্তব্য যেটি ঐতিহাসিকভাবেও একটি স্বীকৃত বিষয়। কুরআনে কারীমের মধ্যে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়াতা’আলা ইরশাদ করেন,

فَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنِ اضْرِب بِّعَصَاكَ الْبَحْرَ ۖ فَانفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِيمِ

“মূসাকে আমি ওয়াহী প্রেরণ করলাম এভাবে যে তুমি তোমার লাঠি দিয়ে সমুদ্রে আঘাত কর।” এখানে আল বাহার বলতে যে সমুদ্রকে বুঝানো হয়েছে সেটি হচ্ছে লোহিত সাগর আর এটিই মিশরের পাশে অবস্থিত। মিশরের পাশে আর কোনো সাগর নেই। এটি হচ্ছে প্রথম কথা। আর নীল নদ হচ্ছে একটি নদী যেটিকে ফির’আউনের যুগ থেকে নিয়ে বর্তমান যুগ পর্যন্ত নাহারুন নীল বলা হয়।

সুতরাং আল বাহার দিয়ে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা লোহিত সাগরকেই বুঝিয়েছেন যেটির পূর্ববর্তী নাম ছিল বাহার আল কুলযুম। পরবর্তীতে এটির নাম হয়ে থাকে লোহিত সাগর। মূসা ‘আলাইহিস সালাম এ পথ দিয়েই সিরিয়ার দিকে বনী ইসরাঈলকে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। আর এটিই মূলত সিরিয়া যাওয়ার পথ। অপরদিকে নীল নদ হচ্ছে মিশর থেকে সুদানে যাওয়ার পথ। তাই এখান থেকে ঐতিহাসিকভাবে এটি প্রমাণিত সত্য যে মূসা ‘আলাইহিস সালাম লোহিত সাগর দিয়েই সিরিয়ার দিকে রওয়ানা করেছিলেন আর লোহিত সাগরেই ফির’আউনের মৃত্যু ঘটেছে। এটিই বিশুদ্ধ বক্তব্য। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন। যদিও এ ব্যাপারে কেউ কেউ ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন এবং নীল নদের কথাও শোনা যায় তবে এ বক্তব্যটুকু শুদ্ধ নয় যেহেতু কুরআনে কারীমের মধ্যে স্পষ্ট করে আল্লাহ্‌ তা’আলা আল বাহার শব্দটি উল্লেখ করেছেন যা কোনোভাবে নীল নদকে বোঝায় না। নীল নদকে কোনো যুগে কোনো ‘আলিম বা ঐতিহাসিকগণ সাগর ছিল অথবা সাগর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এর কোনো প্রমাণ মিলে না।

This Post Has One Comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *