এখনো তবুও তো বেঁচে আছি
বহুদিন মানুষের চোখ দিয়ে জগৎ-সংসার দেখা হয় না!
ইট, বালু, কাঠ, পাথর বা আরো যত জড় বস্তু –
সেসবের চোখ দিয়েই, অনিমেষে চেয়ে দেখি ঘটমান বর্তমানকে।
পেঁয়াজের খোসার মত পরতের পর পরত, একে একে
ঝরে পড়ে মূল্যবোধগুলো – কারা যেন তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে
তুলে নেয় লজ্জা-শরমের আবরণগুলো – আমরা ভাবি:
হোক না, দেহে প্রাণ নিয়ে তবু তো এখনো বেঁচে আছি –
আবরণগুলো গেলেও, ভেতরের শাঁসটুকু তো বেঁচে আছে!
কতকাল মানুষের চোখ দিয়ে পৃথিবী দেখা হয় না!
শীতনিদ্রায় অচেতন বা অলসভাবে রোদ পোহানো
সরীসৃপের মত – নিষ্পলক চোখে চেয়ে দেখি পরিচিত পৃথিবীকে।
শীতের সকালে রোদ পোহানো কুমীরকে দেখে অনেকেই যেমন
বোঝেনা – জীবিত না মৃত ঐ ভয়ঙ্কর অসাড় প্রাণীটি!
তেমনি কথিত ভয়ংকর “জঙ্গী মুসলিমকে” দেখেও বোঝা যায় না
সত্যি কি বেঁচে আছে, নাকি নিষ্প্রাণ – একে একে তার সব কেড়ে
নেয়া হয়। সে চেয়ে থাকে নিঃসীম শূন্যে, কবে কোন “মাহদী” আসবেন বলে।
আজকাল আর মানুষের চোখ দিয়ে পরিবেশ, প্রতিবেশ দেখা হয় না।
বিনোদন আফিমের নেশায় বুঁদ রিপুর ক্রীতদাসের চোখ দিয়ে দেখি
সব – পরিবেশ, প্রতিবেশ। নষ্ট জমিনে নষ্ট বৃক্ষের মতই,
কাফিরের বিষবৃক্ষ শেকড় ছড়িয়ে দেয় সর্বত্র, বহু কষ্টে অর্জিত ম্লেচ্ছদের
চিরদুঃখী ভূ-খন্ডে। আধা-সচেতন অলস চোখের পাতাগুলো
বড় কষ্টে পৃথক করে আমরা চেয়ে দেখি, ঘোলাটে দাসত্বের ছবি।
দেখেও ভাবি: এই তো বেশ – নেশায় মৌতাত রঙীন পৃথিবী –
ভেতরে এখনও রক্ত বয়, এখনো তবুও তো বেঁচে আছি!