السلام عليكم ورحمة الله و بركاته

আমার আগের পোস্টগুলো অনেকের কাছে একটু ভারী মনে হতে পারে – কারণ ওগুলো ছিল ইসলামের একেবারে মৌলিক বিশ্বাস বিষয়ক আলোচনা – মনে হতে পারে অনেক তত্ত্ব কথা দিয়ে ভরা, গজ গজ খস খস করা সব শুকনো বিষয়। এমনটা কারো মনে হয়ে থাকলেও আমি আসলে কাউকে দোষ দিই না। কারণ আমরা প্রায় কেউই “দ্বীন” শিখি না। বাংলাদেশর মুসলিমদের কত % ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, সেই পরিসংখ্যান আমার জানা নেই। তবে ৫% হলেও সেটা খুব খুশির খবর। কেন নামাজ পড়বো, তা না জেনেই আমরা নামাজ পড়তে শিখি এবং পড়ি – নামাজে কি পড়ছি তা না জেনেই বা না বুঝেই, নামাজ পড়া এই ক্ষুদ্র অংশ নামাজ পড়তে পড়তে কবরে চলে যাই। ফলে আমার নামাজের আমার উপরই কোন প্রভাব থাকে না – পরিবেশ প্রতিবেশ ইত্যাদির উপর আর কি থাকবে?

পৃথিবীতে ইসলামই সম্ভবত একমাত্র subject যা নিয়ে কথা বলতে, এর উপর কোন বিদ্যাশিক্ষার প্রয়োজন হয় না। ধরুন আমি বাংলার ছাত্র। আজ যদি আমি কোন পড়াশোনা ছাড়াই, কোথাও মত প্রকাশ করতে গিয়ে 2nd law of thermodynamics নিয়ে কথা বলি, তাহলে আপনারা আমাকে পাগল বা নির্বোধ ভাবতে পারেন। অথচ, ইসলাম এমন একটি সাবজেক্ট যা নিয়ে, এমনকি কোন প্রাথমিক শিক্ষা বা জ্ঞান ছাড়াই, আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতে পারি বা লিখে যেতে পারি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। এটা কি ভাবা যায় যে আপনি ‘ক’,’খ’,’গ’ না শিখেই গরুর রচনা লিখতে চেষ্টা করছেন? কাফির, মুশরিক, হাফ-কাফির, কার্যত কাফির এদের কথা না হয় বাদই দিলাম – কারণ এরা তো পরকালে বিশ্বাস করে না – কিন্তু আমরা বিশ্বাসীরা যখন ইসলাম নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা কি ভেবে দেখি যে, আমরা যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলছি সেটা সম্বন্ধে আমরা আসলেই কোন জ্ঞান অর্জন করেছি কিনা? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও, অন্তত methodologically বা সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে, অগ্রাধিকারের ক্রমানুসারে, আমরা কি কখনো আমাদের দ্বীন শিক্ষা করেছি কি না?? না করে থাকলে, আমরা কিসের ভিত্তিতে ইসলাম নিয়ে কথা বলছি বা মত প্রকাশ করছি??? আগেও বলেছি এবং আবারো আপনাদের এবং নিজেকে মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, অনুমানবশত আল্লাহ্ তথা তাঁর দ্বীন নিয়ে কথা বলা মু’মিন বা মুসলিমদের জন্য মহা পাপ। দেখুন কুর’আনে আল্লাহ্ কি বলছেন:

Say: The things that my Lord hath indeed forbidden are: shameful deeds, whether open or secret; sins and trespasses against truth or reason; assigning of partners to Allah, for which He hath given no authority; and saying things about Allah of which ye have no knowledge. (Qur’an, 7:33)
বল, আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর ব্যাপারে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না। (কুর’আন, ৭:৩৩)

লক্ষ্য করুন, পর্যায়ক্রিমকভাবে আল্লাহ্ এই পাপকে শিরকেরও উপর স্থান দিয়েছেন – কারণ এই পাপ হচ্ছে অগণিত পাপের উৎস।

সবশেষে, ইসলামী স্কলার মহলে “দ্বীন-শিক্ষা” সম্বন্ধীয় একটা প্রবাদ বাক্য রয়েছে: Aqeedah comes first – সবকিছুর আগে বিশ্বাস! সেজন্যই ইসলাম নিয়ে লিখতে গিয়ে সবার আগে, “আমরা কি বিশ্বাস করবো?” – সেই আলোচনাটাই চলে আসে।

আল্লাহ্ হাফিজ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *