আমরা, এদেশের ব্যক্তি-পূজারী আম জনতা
কেবলই ব্যক্তিরূপ মূর্তি খুঁজে বেড়াই –
বন্দনার জন্য, পূজার জন্য, ধ্যানের জন্য –
মালা পরাবার জন্য, হাততালি দেবার জন্য –
পল্টন ময়দানের বেদীতে উপস্থাপনের জন্য।
কি বিচিত্র আমাদের গতি, প্রকৃতি –
পৌত্তলকিতার ঐতিহ্য প্রবাহমান ধমনীতে।
তাই বুঝি “মূরত” ও “সূরত” ছাড়া মন বসে না,
মন মানে না! কখনো ব্যক্তিরূপ মূর্তি-
আবার কখনো মূর্তিরূপ ঈশ্বর। নিজেরা মূর্তি গড়ি –
অতঃপর তার কাছে নিজেকে সমর্পণ করি।
মোহভঙ্গ হলে পরে পুরাতন মূর্তি ভেঙ্গে ফেলি-
আবার তার জায়গায় নতুন মূর্তি গড়ার আয়োজন করি।

ফুলের তোড়া হাতে চৈত্রের খরতাপে দাঁড়িয়ে থাকি
রাস্তার ধারে – ঘন্টার পর ঘন্টা সতৃষ্ণ নয়নে:
যদি আমারই নিজ হাতে গড়া দেব বা দেবী –
ক্ষণিকের তরে কৃপাদৃষ্টি নিক্ষেপ করে আমার দিকে!
ধন্য হয়ে যায় বুঝি এ জীবন, কালো কাঁচের এপার থেকে –
স্বপ্নের ফুলঝুরির কারিগরদের, স্বপ্নের মত এক ঝলক দেখে।

অতঃপর ক্লান্ত নয়নে যখন রাজ-রথের দেখা মেলে –
সাঁই করে মটরকেড চলে যায় চোখের পলকে।
আমাদের ক্লান্ত, শ্রান্ত ও ক্ষুধার্ত চেহারায় ধূলা ছড়িয়ে।
হাতের ফুলগুলো কখনো রয়েই যায়, হত-বিহ্বল ইতঃস্তত হাতে-
কখনো অসহায় বোধে হাতের ফুল ছুঁড়ে দেয়া হয় রথের দিকে,
র‌্যাডিয়েল টায়ারের তলায় পিষ্ট হয় আমাদের পূজার ফুল-
সাথে চূর্ণ হয় শত শত অপূর্ণ ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,
আর আমাদেরই সৃষ্ট আমাদের ভালোবাসার মূর্তি ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *