السلام عليكم ورحمة الله و بركاته

রাসূল(সা.) বেঁচে থাকতে কাউকে ভাবতে হয়নি “কি বিশ্বাস করতে হবে” আর “কি বিশ্বাস করা যাবে না”। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর পর, বিশেষত উমর (রা.)-এঁর সময়, ইসলামের এত দ্রুত প্রসার ঘটে যে, ধর্মান্তরিত মুসিলমদের নতুন জনসংখ্যাকে সামাল দেয়া বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। মুসলিমদের quantity বাড়লেও quality বা গুণগত মান হ্রাস পায় – নতুন মুসলিমদের অনেকেই তাদের আগের ধর্মের, তথা, জাতীয়তার সংস্কার ও কু-সংস্ককারের “লট-বহর” সঙ্গে নিয়ে ইসলামে প্রবেশ করেন। এতে আক্বীদাতে বা বিশ্বাসে ভুল-ত্রুটি মিশ্রিত হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমররে(রা.) জীবদ্দশায়ই, বসরায় একদল লোক ঈমানের ৬ টি স্তম্ভের একটিকে – অর্থাৎ ক্বদরকে – অস্বীকার করতে শুরু করে এবং সেখান থেকে দু’জন এসম্বন্ধে জানতে আসলে, তিনি তাঁর বাবা উমর (রা.) সূত্রে “হাদীস জিবরীল” নামক বিখ্যাত হাদীসখানি বর্ণনা করেন, যাতে সুনির্দিষ্টভাবে ইসলাম ও ঈমানের স্তম্ভগুলি এবং ইহসান সম্বন্ধে বলা হয়েছে।

তৃতীয় খলিফা উসমানের (রা.) মৃত্যু এবং তার পরের ঘটনাবলীকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট “বড় ফিতনার” পটভূমিতে, দুঃখজনকভাবে ইসলামে বিভিন্ন উপদলের উদ্ভব ঘটে এবং এই উপদলগুলির জন্মের মধ্য দিয়ে নানাবিধ ত্রুটিপূর্ণ আক্বীদারও জন্ম হয়। এরপর “ইলমুল কালাম”-এর চর্চা শুরু হয়, মুতাযিলা নামক চরম যুক্তিবাদী উপদলের জন্ম হয় এবং খলীফা আল মামুনের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামে “ফালসুফা” বা নানাবিধ দর্শনের অনুপ্রবেশ ঘটে। এসময় কুর’আন সৃষ্ট কি সৃষ্ট নয়, এই বিতর্কের জন্ম হয় এবং আহমাদ বিন হাম্বল, কুর’আনকে সৃষ্ট বলে মানতে অস্বীকার করলে, তাকে রাষ্ট্রযন্ত্রের অত্যাচারের শিকার হতে হয়। উপদলগুলোর অনেকেই তখন আল্লাহর সিফাতসমূহ বা গুণাগুণ অস্বীকার করতে শুরু করে। এরকম একটা পটভূমিতে মিশরে ইমাম তাহাভীর(২৩৯ – ৩২১ হিজরি) জন্ম হয়। তিনি মুসলিমদের আক্বীদাহ্ বা বিশ্বাসসমূহকে সুসংহত করে একটি বিশাল কার্য সম্পাদন করেন, যা আজো দ্বীন শিক্ষার আয়োজনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে গণ্য হয়ে থাকে। তিনি হানাফী মাযহাবের অনুসারী হলেও, “আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়া” নামক তার ঐ কাজ, আজো সকল মাযহাবের কাছে গ্রহণযোগ্য। ১০৫ টি পয়েন্টের আকারে তিনি আহলে সুন্নাহ ওয়া আল জামা’আর আক্বীদাহ্ লিপিবদ্ধ করেন। এর প্রথম ২৮টি পয়েন্ট বলে দেয় কুর’আন ও সুন্নাহর আলোকে, আমরা আল্লাহ্ সম্বন্ধে কি আক্বীদাহ বা বিশ্বাস পোষণ করবো। আপনাদের জ্ঞতার্থে আমি ইনশা’আল্লাহ্ আক্বীদাহর ঐ পয়েন্টগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে দেবো।

ফি আমানিল্লাহ্!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *